শীর্ষবিন্দু নিউজ: রাস্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিতর্কিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন স্টিল পদত্যাগ করেছেন। গণমাধ্যমের কাছে পদত্যাগের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি এই পদত্যাগ করেছেন বলে জানা যায়।
কেভিন স্টিল যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত। অথচ এই বিষয়টি গোপন করেই তিনি বিমানের এমডি পদে আবেদন করেন। বিষয়টি অফিসিয়ালি কেউ না জানলেও বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদসহ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্য তা জানতেন। এরপরেও তা গোপন রেখেই কেভিনকে এমডি পদে বহাল রাখা হয়। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ থেকে চাকরিচ্যুত এই কেভিনকে নিয়োগের আগে বিভিন্ন সংবাদপতে্রে শিরোনাম হোন এবং একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্ত এরপরেও বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ তাকে নিয়োগ দেন। কারণ তার মাধ্যমে জামাল উদ্দিন বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। যাতে তার ঘাড়ে কোনো দোষ না আসে।
কেভিন গণমাধ্যমকে বলেন, যক্ষ্মা রোগের কারণেই আমাকে বিমানের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। কারণ আমার আগে থেকেই যক্ষ্মা রোগ ছিল। তাছাড়া আমার স্ট্রোকও হয়েছিল। এসব কারণে চিকিৎসক বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। কিন্তু বিমানের এত প্রেশারের চাকরি করে আমার পক্ষে বিশ্রাম নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। তবে কবে থেকে তিনি আর দায়িত্বে থাকছেন না বিস্তারিত জানাননি।
কেভিন স্টিল গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম বিদেশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে বিমানে যোগ দেন। এরপর তিনি দুই বছরের মধ্যে বিমানকে তিনি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ঘোষণা দেন। এর ঠিক প্রায় এক বছরের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২১৪ কোটি টাকা লোকসান দেয়। ২২ লাখ টাকা বেতন, বিনামূল্যের টিকেটসহ সবমিলিয়ে কেভিনের পেছনে প্রতিমাসের বিমানের খরচ ৩০ লাখ টাকা। এরপরেও বিমানের এই পরিমান অর্থ লোকসানের তার বিমানে থাকা নিয়ে কয়েক মাস ধরেই প্রশ্ন উঠেছে।
শুধু তাই নয়, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই কেভিন একের পর এক বিভিন্ন রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু করছে, জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়োগের আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বিমানের লন্ডনের জায়গা বিক্রি করা, বোয়িংয়ের কাছ থেকে কেনা ৭৭৭-৩০০ উড়োজাহাজ বিক্রি করে ভাড়ায় উড়োজাহাজ নেওয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে শুরুতে বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পান এই ব্রিটিশ নাগরিক।
সম্প্রতি জিএসএ নিয়োগ ও উড়োজাহাজের লিজ বাণিজ্যের কমিশন নিয়ে বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না কেভিনের। এছাড়া ঢাকা-ইয়াঙ্গুন, ঢাকা-দিল্লী রুট পুনরায় চালু করলেও এসব রুটে যাত্রী পাচ্ছে না বিমান। মূলত মার্কেট সার্ভে না করে রুট চালু করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরাসরি ইয়াঙ্গুন ফ্লাইটে যাত্রী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ইয়াঙ্গুনে জিএসএ নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে কেভিনের বিরুদ্ধে।