শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ মালয়েশীয় উড়োজাহাজ সম্পর্কে দ্বিতীয়বারের মতো সংবাদ সম্মেলন করছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ। কুয়ালালামপুরে দেশটির ভারপ্রাপ্ত পরিবহনমন্ত্রী মিশহামুদ্দিন হুসাইন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। এরই মধ্যে এ খবর জানিয়ে একটি টেক্সট মেসেজ ফ্লাইটটির ২৩৯ জন আরোহীর পরিবারের কাছে পাঠিয়েছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত সোমবার প্রথম ব্রিফিং এ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিক রাজাক জানান, নিখোঁজ এইএইচ৩৭০ ফ্লাইটের কোনো যাত্রী বেঁচে নেই। উড়োজাহাজটি ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত পরিবহনমন্ত্রী মিশহামুদ্দিন হুসাইন বলেন, উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ সদৃশ যেসব সম্ভাব্য বস্তুর সন্ধান আমরা পাচ্ছি সেখানে আমরা অনুসন্ধান চালাব। নতুন করে যে অনুসন্ধান এলাকা আমরা চিহ্নিত করেছি তা আয়তনে যুক্তরাজ্যের চেয়েও বড়। নিজের বক্তব্যে একটি ব্রিটিশ স্যাটেলাইট কোম্পানির উপগ্রহে ধরা পড়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের বরাত দেন তিনি।
নাজিব রাজাক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে উড়োজাহাজটির চীনা আরোহীদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বলেন, আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে, উড়োজাহাজটির সবশেষ অবস্থান ছিলো ভারত মহাসাগরের পার্থ এলাকায়ই। তিনি বলেন, আমি এসব কথা বলছি ভারত সাগরে ধ্বংসাবশেষ ভেসে থাকতে দেখা গেছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে নয়, বরং ইনমারস্যাট যে তথ্য দিয়েছে তার ভিত্তিতে।
ব্রিটিশ স্যাটেলাইট প্রোভাইডার ইনমারসেট ও যুক্তরাজ্যের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থার (এএআইবি) উদ্ধৃতি দিয়ে ঘটনার প্রায় ১৬ দিন পর নাজিব রাজাক বলেন, লন্ডনভিত্তিক স্যাটেলাইট কোম্পানি আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে উড়োজাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। উড়োজাহাজটি আটঘণ্টা আকাশে ছিল।
গত ৮ মার্চ মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি ২৩৯ জন যাত্রী ও ক্রু নিয়ে নিখোঁজ হয়। উড়োজাহাজটি কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় সেদিন দিবাগত রাত ২টা ৪০ মিনিট থেকে ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ নিখোঁজ হয়। বোয়িং বি৭৭৭-২০০ বিমানটিতে ২২৭ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু ছিলেন। স্থানীয় সময় পরেরদিন সকাল সাড়ে ৬টায় উড়োজাহাজটির বেইজিংয়ে অবতরণের কথা ছিল।
মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, উড়োজাহাজে ১৪টি দেশের নাগরিক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে চীনের ১৫২ জন, মালয়েশিয়ার ৩৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১২ জন, অস্ট্রেলিয়ার সাতজন, ভারতের পাঁচজন, যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন, ফ্রান্সের তিনজন, নিউজিল্যান্ডের দুজন, ইউক্রেনের দুজন, কানাডার দুজন এবং ইতালি, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়ার একজন করে নাগরিক ছিলেন।