শীর্ষবিন্দু নিউজ: মুসা ইব্রাহীমের এভারেস্টজয় নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে তার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী ব্রেন্ডন ও’মাহনি। এভারেস্টজয়ী ও’মাহনী দাবি করেছেন, হিমালয়ের চূড়ায় বাংলাদেশের মুসা ইব্রাহীমকে দেখেছিলেন তিনি। মুসার ফেইসবুক পাতায় মঙ্গলবার একটি ভিডিও পোষ্ট করা হয়েছে। তাতেই ও’মাহনিকে মুসার এভারেস্ট জয়ের কথা বলতে শোনা যায়।
[youtube id=”D8B3z5lpZ7M” width=”600″ height=”350″]
মুসার এভারেস্ট জয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর তার বিরুদ্ধে নেপালের লাংসিসা-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় না করেই সনদ নেয়ার অভিযোগ তোলেন ওই অভিযানে তার সহযাত্রী পর্বতারোহী মীর শামসুল আলম বাবু। এভারেস্ট জয় নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত মুসা জানিয়েছিলেন, তিনি দেশে ফিরেই তার কৃতিত্বের প্রমাণ দেবেন। সম্প্রতি এভারেস্টজয়ীদের নিয়ে প্রকাশিত নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং নেপাল মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশনা নেপাল পর্বত-এ মুসা ইব্রাহীমের নাম পাওয়া যায়নি। এভারেস্টজয়ী প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুসা ইব্রাহীম স্বীকৃতি পেলেও তার এই কৃতিত্ব নিয়ে বাংলাদেশের অনেকেই সন্দেহ পোষণ করে আসছিলেন।
নেপাল পর্বতে মুসার বদলে এম এ মুহিতের নাম থাকার বিষয়টি গত শনিবার একাত্তর টেলিভিশন প্রকাশ করলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। মুসাকে নিয়ে সন্দিগ্ধদের বক্তব্য, এভারেস্টজয় নিয়ে মুসার যে গল্প তাতে সর্বোচ্চ চূড়ায় তার ওঠার অভিজ্ঞতার বর্ণনা পাওয়া যায় না। মুসার ফেইসবুক পাতায় থাকা ভিডিওতে তার বন্ধু ও’মাহনীকে বলতে শোনা যায়, “আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই যে মুসা এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে পেড়েছিলেন।
তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল থার্ড স্টেপ এর চূড়ায়, যেটি এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার শেষ প্রতিবন্ধকতা। এরপর যখন মুসার ছবিগুলো দেখলাম, সেই উজ্জ্বল কমলা রংয়ের জ্যাকেট, হাতে বাংলাদেশের পতাকা, সেই একই শেরপা। আমার মনে একদমই কোন সন্দেহ নাই যে মুসা পেরেছিল। ২০১০ সালের ঘটনার সময় মুসাকে না চিনলেও পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়।
মুসার সঙ্গে দেখা হওয়ার বর্ণনা দিয়ে ও’মাহনি বলেন, “যখন সূর্য উঠছিল, আমি থার্ড স্টেপের বেস এ পৌঁছালাম। আমার সামনে তখন আরেকজন আরোহী ছিলেন। এর মিনিট ১০-১৫ পরে যখন আমি থার্ড স্টেপ এর চূড়ায় আমি আরেকজনকে উঠে আসতে দেখি। পরে জেনেছিলাম, সেই আরোহীই ছিলেন মুসা ইব্রাহীম, সে সময় তার পরনে ছিল উজ্জ্বল কমলা রংয়ের জ্যাকেট। সে আমার সাথেই থার্ড স্টেপের চূড়া অতিক্রম করে। এর ২৫-৩০ মিনিট পর আমি এভারেস্ট এর চূড়ায় পৌঁছাই। এর ১ ঘণ্টা পর যখন আমি নেমে আসছিলাম সেকেন্ড স্টেপের নিচে তখন আবার উজ্জ্বল কমলা রংয়ের জ্যাকেট পরা সেই ভদ্রলোকের দেখা হয়।
ও’মাহনি বলেন, মুসা সেখানে শুয়ে পড়েছিলেন, তার শেরপা তাকে উঠে দাঁড়াতে বলছিল। আমার মনে হল, এখানে একটি খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে। আমি সে সময় আমাদের ধরে রাখা দড়ির নিচে এসে দাঁড়াই। আরোহীকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে কেমন আছে? ঠিক আছে কি না, জানতে চাইলে সে বলল যে সে ঠিক আছে, কিন্তু অনেক ক্লান্ত। আমি তাকে তার নাম জিজ্ঞাসা করলাম, সে কোথা থেকে এসেছে জানতে চাইলাম। উত্তরে সে বলল, তার নাম মুসা, সে বাংলাদেশ থেকে এসেছে।
এরপ মুসাকে নেমে আসতে সহায়তা করেছিলেন বলে ও’মাহনি জানান। কয়েকদিন পরে কাঠমান্ডুতে বেসক্যাম্প থেকে যাওয়ার সময় একটা জায়গায় আমরা ব্রেক নিয়েছিলাম। তখন একজন বলে উঠল, সে বাংলাদেশ থেকে এসেছে। আমি বললাম, ও তুমিই সেই জন যার সঙ্গে আমার ওপরে দেখা হয়েছিল। আর মুসা আমাকে জড়িয়ে ধরল, সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাল। এরপর থেকেই আমরা বন্ধু।