বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১২

মেয়র লুৎফুরকে নিয়ে বিবিসির গোপন নথি ফাঁস

মেয়র লুৎফুরকে নিয়ে বিবিসির গোপন নথি ফাঁস

সুমন আহমেদ: লন্ডনের জনবহুল বাঙ্গালী অধ্যুষিত এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটস বারার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রথম নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে এক প্রকার কোমর বেঁধে নেমেছে ব্রিটেনের গণমাধ্যমগুলো। আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র লুৎফুরকে নিয়ে প্রচারিত হচ্ছে নানা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। চেষ্টা হচ্ছে তাকে একজন কট্টর ইসলামপন্থী এবং বাঙালি কমিউনিটির প্রতি এক পেশে হিসেবে উপস্থাপনের।

এদিকে মেয়র লুৎফুরকে নিয়ে বিবিসির পেনোরমা অনুষ্ঠানের কিছু গোপন নথি ফাঁস করে দিয়েছে বাঙালি এক তরুণী।। ফাঁস হওয়া ঐসব নথির ভিত্তিতে মেয়র লুৎফুর রহমান বিবিসির বিরুদ্ধে বর্ণবাদ এবং ইসলাম বিদ্ধেষের অভিযোগ এনেছেন। আবার এ তথ্য ফাঁসের ঘটনায় বিবিসি তার সোর্সদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারেনি- পার্লামেন্টে এমন বিতর্কের পর মঙ্গলবার বিবিসি তার সোর্সদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। এসব ঘটনায় গত দু’দিন ধরে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে রীতিমত তোলপাড় চলছে।

২০১০ সালে মিথ্যা অভিযোগে লুৎফুর রহমানকে দল থেকে বহিস্কার করে লেবার পার্টি। এ জন্য তখন লেবার পার্টিকে ৫০ হাজার পাউন্ড জরিমানাও গুণতে হয়েছিল। পরে লুৎফুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রথম নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হন। আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য মেয়র নির্বাচনে তিনি পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কয়েকদিন আগে আইটিভি লুৎফুরকে নিয়ে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রচার করতে চেয়েছিল। মেয়র এটাকে উদ্দেশ্যমূলক এবং নির্বাচনে তার বিরোধীদের সুবিধা করে দেয়ার ফন্দি বলে অভিযোগ করেছেন। আদালতের এ প্রামাণ্য চিত্রের ওপর নিষেদাজ্ঞা জারি করেছে বলে জানা যায়।

মে মাসের নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়রকে নিয়ে বিবিসি পেনোরমা প্রচার করবে এমন খবরে বেশ আলোচনা চলছিল কমিউনিটিতে। অবশেষে গত সোমবার অনুষ্ঠানটি প্রচার করে বিবিসি। আধ ঘণ্টার এ প্রামাণ্য চিত্রে বলা হয়, মেয়র তার নিজের কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মসজিদগুলোকে বেশি অনুদান দিয়েছেন। নির্বাচনে সংগঠনগুলোর সমর্থন পেতে মেয়র এমটি করেছেন। মেয়র লুৎফুর এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেছেন, তার দেয়া মোট ২৬ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদানের মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশ পেয়েছে বাঙালি সংগঠনগুলো। যা মোট অনুদানের মাত্র ৮ শতাংশ। অথচ টাওয়ার হ্যামলেটসে মোট জনগোষ্ঠীর ৩৩ শতাংশই বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। এই অনুষ্ঠান প্রচারের দু’দিন আগেই মেয়র একটি পাল্টা প্রামাণ্য চিত্র (নাম- মেয়র লুতফুর রহমান এক্সপোস্ড) অনলাইনে ছাড়েন। দু দিনে যার দর্শক সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৪০ হাজার।

এদিকে পেনোরমার এ প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণের সহায়তা করার জন্য পেশায় সাংবাদিক ২৪ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণীকে নিয়োগ দিয়েছিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফিল্ম অফ রেকর্ডস। অনুষ্ঠানের এমন কিছু কাগজ পত্র এই তরুণীর নজরে আসে যাতে তিনি অনুধাবন করেন- এই অনুষ্ঠান বাঙালি কমিউটিকে হেয় করার জন্য। নিজেকে একজন হুইসেল ব্লোয়ার (নিয়ম ভঙ্গের তথ্য ফাঁসকারী) দাবি করে এই তরুনী ইংরেজী দৈনিক ইন্ডিপেন্টকে বলেছে, তিনি দেখেছেন পেনোরমার এ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যই হল, বাংলাদেশি, ইসলাম, মসজিদ এগুলোকে হেয় করা। এটা বর্ণবাদী, ইসলাম বিদ্বেষী এবং বিবিসির সম্পাদকীয় নীতির বিরোধী। তিনি আরো বলেন, যখন নিজের শেকড় এবং কমিউনিটির উপর আঘাত আসে তখন নিজেকে সামলানো কঠিন। তাই তিনি বাধ্য হয়ে পেনোরমার প্রায় ১ হাজার পাতার গোপন নথি মেয়র লুতফুর রহমানের হাতে তুলে দিয়েছেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025