শীর্ষবিন্দু নিউজ: এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব হয়েছেন রওশন এরশাদের ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এরশাদের প্রেসসচিব সুনীল শুভ রায় বলেন, জাপা চেয়ারম্যান তার ক্ষমতাবলে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিবের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার দলের সভাপতিমণ্ডলীতে থাকছেন বলে সুনীল জানান। জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে পা রাখা বাবলু ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন। গত শতকের ’৮০ এর দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলার মধ্যে জিএস থাকা অবস্থায় এরশাদের সরকারে যোগ দিয়েছিলেন বাবলু, যার জন্য তখনকার ছাত্রনেতারা তার সমালোচনামুখর এখনো।
বিএনপিবিহীন দশম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিয়ে মতদ্বন্দ্বের মধ্যে ভোটের পর থেকে হাওলাদারকে সরানোর গুঞ্জন চলছিল। এর মধ্যেই ভোটের তিন মাস পর বৃহস্পতিবার হাওলাদারকে সরিয়ে বাবলুকে সেই দায়িত্ব দেয়া হল, যাকে জাতীয় পার্টিতে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও দেখা হয়। বাবলু ও হাওলাদার দুজনই দশম সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। বাবলু চট্টগ্রাম নগরীর একটি আসনে এবং হাওলাদার পটুয়াখালী থেকে নির্বাচিত হন।
বাবলুকে মহাসচিব করার দিনই সংসদে বক্তব্যে রওশন বলেন, তারা বিরোধী দল হিসেবে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন বাবলু। ভোটের আগে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদের নানামুখী অবস্থানের মধ্যেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট ধরে রাখতে তৎপর দেখা গিয়েছিল তাকে। রওশনের নেতৃত্বে বাবলুর সঙ্গে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে অবস্থান জানান।
রওশনের বাড়িতে তাদের বিভিন্ন বৈঠকে দেখা যেত না হাওলাদারকে। তাকে দেখা যেত এরশাদের ভাই দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিএম কাদেরের সঙ্গে। নির্বাচনে হাওলাদার জিতে এলেও হারতে হয়েছে জিএম কাদেরকে, যিনি শেখ হাসিনার গত সরকারে মন্ত্রী ছিলেন। এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী দল হয় জাতীয় পার্টি, রওশন হন বিরোধীদলীয় নেতা।
ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েও নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি এরশাদ। তিনি বলেছেন, সময় হলে সব বলবেন। অন্যদিকে রওশনের দাবি, তারা যা করেছেন, সবই হয়েছে এরশাদের সম্মতিতে। স্বামী এরশাদের সঙ্গে দল পরিচালনার বিষয় নিয়ে কোনো মতভেদ নেই বলেই সম্প্রতি জানান তিনি।