শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ১১:৩২

বিমানবন্দরে অভিনব পদ্ধতিতে স্বর্ণ চোরাচালান

বিমানবন্দরে অভিনব পদ্ধতিতে স্বর্ণ চোরাচালান

ইমরান আলী: অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আসছে ছোট স্বর্নের চালান। একের পর এক বড় চালান ধরা পড়ায় এক ধরনের ভীতি থেকে স্বর্ন চোরাকারবারিরা ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে স্বর্ণ চোরাচালান করে আসছেন। শুল্ক গোয়েন্দারা কিছু আটক করতে সক্ষম হলেও এর বড় অংশই চলে যাচ্ছে বাইরে।

তবে শুল্ক গোয়েন্দা কমকর্তাদের দাবি, পাচারকারী সদস্যরা গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে কিছু পাচার করলেও অধিকাংশই গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে চোরাকারবারিরা বড় চালানের ঝুঁকি নিচ্ছেন না। আর ছোট চালান সহজেই বহন করে পার করা যায় এমন চিন্তায় তারা ছোট ছোট চালানের মাধ্যমে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে গোয়েন্দা সদস্যদের নজরদারির কারণে সেগুলোও ধরা পড়ছে। উদ্ধারের বাইরে যে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে না- এমন দাবি না করে কর্মকর্তারা বলছেন, আমাদের তৎপরতার কারণে এ বিমানবন্দর ব্যবহার করে স্বর্ণ চোরাচালান কমেছে।

শুল্ক গোয়েন্দাদের দেওয়া পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত জুলাই মাসে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ৮টি স্বর্ণের চালান আটক করা হয়েছে। গত ২ জুলাই ১ কেজি ২৮৩ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক করা হয় একজনকে, ৬ জুলাই প্রায় দেড় কেজিসহ আটক করা হয় একজনকে। ৮ জুলাই দু’টি স্বর্ণের চালান আটক করা হয়। দুই চালানে সাড়ে ৯ কেজির ওপরে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয় এবং আটক করা হয় দু’জনকে। ১০ জুলাই ১ কেজির কিছু ওপরে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়, এ সময় আটক করা হয় একজনকে। ১২ জুলাই ৯শ’ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক করা হয় একজনকে। ২০ জুলাই ৫ কেজি ৮৩১ গ্রাম স্বর্ণসহ আটক করা হয় একজনকে। ২৫ জুলাই ১ কেজির ওপরে স্বর্ণ উদ্ধারসহ আটক করা হয় দু’জনকে।

চলতি আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত মোট ৪টি স্বর্ণের চালান আটক হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ আগস্ট দেড় কেজি, ১৭ আগস্ট দেড় কেজি, ২১ আগস্ট ৪ কেজি ২শ’ গ্রাম এবং ২২ আগস্ট ৭ কেজি ৩শ’ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ সকল ঘটনায় ১ জন করে আটকও হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এপ্রিল মাসে ১শ’ কেজির ওপরে, কখনো ৩০ কেজি, ৩৪ কেজি ওজনের স্বর্ণের বার উদ্ধার হলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসছে।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করেই ছোট ছোট স্বর্ণের চালানগুলো বের করছেন চোরাকারবারিরা। কখনো ফ্লাস্ক, কখনো বিস্কুটের প্যাকেট, কখনো জুসের প্যাকেট এমনকি ওয়াটার পাম্পের ভেতর করেও স্বর্ণ পাচারের ঘটনা ঘটছে। গত ২১ ও ২২ আগস্ট অভিনব পন্থায় স্বর্ণ পাচারের সময় ধরা পড়েন চোরাকারবারি। অভিনব পন্থায় আনা ৪ কেজি ও ৭ কেজি ওজনের স্বর্ণের বার উদ্ধার করে গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।

তবে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, বড় চালানগুলো আটক হওয়ার ফলে স্বর্ণের চোরাকারবারিরা এ থেকে সরে আসছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখেননি। ছোট ছোট চালান করে তারা স্বর্ণ পাচার অব্যাহত রেখেছেন। তবে কঠোর নজরদারির কারণে তারা সুবিধা করতে পারছেন না।

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক মইনুল খান বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যবসায় প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। আমাদের তৎপরতার কারণে একের পর এক স্বর্ণের চালান ধরা পড়ার কারণে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। যার কারণে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে স্বর্ণ চোরাচালান কমে আসছে। এখনও যারা এ অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন, তারা ছোট ছোট চালান নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করে বলছি না যে, স্বর্ণের বড় চালান আসছে না। তবে গত দুই মাসের পরিসংখ্যানে তাই বলে। তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্ধারের বাইরেও যে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে না তাও বলছি না। তবে আমরা যে নজরদারি রেখেছি, তাতে করে আমরা সফল হচ্ছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিনব পদ্ধতি যে ব্যবহার করে যে পাচার হচ্ছে না তা নিশ্চিত করে বলছি না। তবে আমরা গত ২১ ও ২২ আগস্ট দু’টি চালান আটক করা হয়েছে। আমরা আমাদের কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025