শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২১

রামাদ্বান: অফুরন্ত নেকী অর্জন ও গুণাহ বর্জনের সুবর্ণ সুযোগ

রামাদ্বান: অফুরন্ত নেকী অর্জন ও গুণাহ বর্জনের সুবর্ণ সুযোগ

মাওলানা শায়েখ আব্দুল কাইয়ূমঃ রাহমাত, মাগফিরাত আর নাজাতের সুবাস নিয়ে বছর ঘুরে আবারো আমাদের নিকট এসেছে মাহে রামাদ্বান। বেশি বেশি করে ইবাদাত করা আর গুণাহ থেকে বেঁচে থাকার আর একটা সুযোগ পেয়েছি আমরা। এরপর আর একটা সুযোগ কি আসবে আমাদের জীবনে?

এমনতো হতে পারে যে এটা আমাদের জীবনের শেষ রামাদ্বান। তাহলে আসুন পরিকল্পনা গ্রহণ করি কিভাবে এবারের রামাদ্বানে সর্বোচ্চ ফায়দা অর্জন করতে পারি। অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ার জন্য প্রথমে আবারো চোখ বুলিযে নেই রোজা ও রামাদ্বানের ফযীলত ও গুরুত্ব সংক্রান্ত কিছু হাদীসের উপর। রাসূলে কারিম (সা.) এরশাদ করেছেন, আদম সন্তান প্রতিটি ভাল কাজের প্রতিদান দশগুন থেকে সাত শতগুন পর্যন্ত বর্ধিত হয়।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তবে রোজা, সেটা তো আমার উদ্দেশ্যে নিবেদিত। তার প্রতিদান আমি নিজেই দিব। আমার (সন্তুষ্ট হাসিলের) উদ্দেশ্যে রোজাদার পানাহার থেকে বিরত থেকেছে…রোজাদারের মুখ থেকে নির্গত দুর্গন্ধ আল্লাহ পাকের নিকট মিশকের সুগন্ধের চেয়েও প্রিয়-(বুখারী)। একমাসের সিয়াম সাধনের মতো এক নাগাড়ে এত দীর্ঘ ইবাদতের সুযোগ আমাদের জীবনে আর দ্বিতীয়টি নেই। দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা। আর রাতের বেলায় কেয়ামুল্লাইল অর্থাৎ নামাযে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় কুরাআন তেলাওয়াতের সুযোগ নিয়ে রামাদ্বান আসে বার বার আমাদের কাছে।

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন ‘রাসূল করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন রোযা এবং আল কুরআন উভয়ে বান্দার জন্য কেয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রোযা বলবে হে প্রভু আমি তাকে দিনের বেলায় পানাহার ও প্রবৃত্তির চাহিদা মেটানো থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। আল কুরআন বলবে হে প্রভু, আমি তাকে রাতের বেলা ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। উভযে বলবে, হে প্রভু তার ব্যাপারে আমাদের সুপারিশ কবুল করুন। আল্লাহ পাক তাদের উভয়ের সুপারিশ কবুল করে নিবেন’-(আহমদ)।

আবু সাইদ আল খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, ‘কেউ যদি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি রোযা সম্পন্ন করে, সে একটি দিনের কারণে আল্লাহ তার চেহারা থেকে জাহান্নামের আগুনকে সত্তর বছর দূরে নিয়ে যান’।-(আহমদ) সহুল বিন সা’দ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূল কারিম (সা.) এরশাদ করেছেন, জান্নাতে একটি বিশেষ ফটক রয়েছে, তার নাম হচ্ছে রাইয়ান। সেখানে থেকে ডাক দেয়া হবে। রোজাদারগণ কোথায়? সর্বশেষ রোযাদারের প্রবেশ সম্পন্ন হরে ফটকটি বন্ধ করে দেয়া হবে।-(বুখারী ও মুসলিম)।

আল্লাহর কাছ থেকে কতনা অবারিত সুসংবাদদের সুবাস নিয়ে হাজির হয় রামাদ্বান প্রতিবার আমাদের কাছে। আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার রামাদ্বান মাসের আগমন হলে নবীজি আমাদের ল্য করে বলেন, ‘বরকতময় একটি মাস তোমাদের নিকট এসে গেছে, যে মাসে সিয়াম সাধানা তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হয়েছে। এ মাসটিতে জান্নাতের প্রবেশ দ্বারগুলো খুলে রাখা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলোকে বন্ধ করে রাখা হয়, শয়তানগুলোকে শিকল দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। এমাসে রয়েছে এমন একটি রাত যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি সে রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত, সে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত’।-(আহমদ, নাসাঈ, বায়হাকি)

অন্য হাদীসে এসেছে, রামাদ্বানের আগমন ঘটার সাথে সাথে একজন ফেরেশতা ডাকতে থাকে হে সুকর্ম সন্ধানী, সুসংবাদ গ্রহণ করো। আর হে দুস্কৃতি সন্ধানী বিরত হও। রামাদ্বান শেষ হওয়া পর্যন্ত এ ডাক চলতে থাকে।(তিরমিযী, ইবন মাজাহ ইবন খোযাইমাহ)।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও খতিব ইস্ট লন্ডন মসজিদ




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024