শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৪

গার্ডিয়ানের নিবন্ধন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বৃটিশ ইতিহাসে ঠাঁই হয়নি জীবন উৎসর্গকারী সিলেটিদের

গার্ডিয়ানের নিবন্ধন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বৃটিশ ইতিহাসে ঠাঁই হয়নি জীবন উৎসর্গকারী সিলেটিদের

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তানজির আহমেদ রাসেল: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃটিশ বাহিনীর হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সিলেটিদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে বৃটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান। গভীর সমুদ্রে বৃটেনের জন্য জীবন উৎসর্গ করা সিলেটি এ নাবিকদের অবদান গভীর শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করা হলো।

বৃটেনের জন্য যুদ্ধ করে তাদের যতটুকু   স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল তারা সে স্বীকৃতি পাননি। বৃটেনের শতবর্ষের ইতিহাসে কোথাও ঠাঁই নেই এসব সিলেটির। সমপ্রতি বৃটিশ সেনা লি রাগবি নিহত হওয়ার পর সিলেট অঞ্চলের বীর সেসব সৈনিকের কথা দ্য গার্ডিয়ান-এ আয়ান জ্যাকের নিবন্ধে উঠে আসে । নিবন্ধে বলা হয়, মৃত্যু নানা রকমের হয়ে থাকে। কোন কোন মৃত্যু হয় পরম সম্মানের। আজীবন মনে দাগ কাটে সে মৃত্যু।

সম্প্রতি বৃটিশ সেনাসদস্য লি রাগবির মৃত্যু অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে ঐতিহাসিক উলউইচ-এর এক প্রাচীন সামরিক জনপদে। ‘লি রাগবি উইলবি লং রিমেম্বার্ড, নট সো এভরি মিলিটারি ক্যাজুয়েলটি’- শীর্ষক নিবন্ধে আয়ান জ্যাক বলেন, বৃটিশ সেনা লি রাগবি হত্যাকাণ্ড বিষয়ে মুসলমানরা বলছেন, এ হত্যার সঙ্গে ইসলামের কোন যোগসূত্র নেই আর আফ্রিকানরা একে দেখছে নৃশংস ও বর্বর ঘটনা হিসেবে। আমেরিকানরা লি রাগবিকে শহীদ ও বীর সেনা বলে আখ্যায়িত করেছে। মৃত্যুর পর লি রাগবির কবর ফুল আর শোকবার্তায় ছেয়ে গেছে। এর মধ্যে এইচপি সসের বোতলের স্টিকারে লি রাগবির বোন সারা-র লেখা শোকবার্তাটি (তোমার প্রিয়, ভালবাসাসহ- তোমার ছোট বোন, সারা) হৃদয় ছুঁয়ে যায়, নিবিড়তম ভালবাসায়, আর পরম মমতায়। বহু ঐতিহাসিক ঘটনায় বৃটেনের মাটিতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারানো ১৭ হাজার মানুষের মধ্যে জাহাজের খালাসির কাজে নিয়োজিত ৬৬০০ জন ছিলেন অ-ইউরোপীয়। অবিভক্ত ভারতের এসব মানুষের বেশির ভাগই ছিলেন বাংলাদেশের সিলেট এলাকার। এ সিলেটি খালাসিরা জাহাজের সবচেয়ে নিচের তলায় কয়লা ভাঙার কাজ করতেন। যুদ্ধ চলাকালে শত্রুদের টর্পেডো আক্রমণে এ খালাসিদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল দুস্কর। নিবন্ধে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কয়েকটি বৃটিশ বাণিজ্যিক জাহাজডুবি হয়েছিল। এই সব জাহাজের ১ লাখ ৯০ হাজার লোকের মধ্যে খালাসি ছিলেন ৫০ হাজার। রেকর্ডে দেখা যায় ৫ জন ইউরোপিয়ানের সলিল সমাধি ঘটেছিল, আর বাকিদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা আজও জানা যায়নি। লেখক বলেন, ইতিহাসে স্বীকৃতি তো  দূরের কথা, শতবর্ষের ইতিহাসে কোথাও নামই নেই এই জীবন সংগ্রামী সিলেটিদের। যদিও লন্ডনের টাওয়ার হিলের গ্রেট মনুমেন্ট টু দ্য মার্চেন্ট নেভিস ওয়ার- স্মারকস্তম্ভে মি. আলী, মি. মিয়া, আবদুল প্রমুখ দু-একজন সিলেটির নাম পাওয়া যায়। সে সময় বৃটিশ ভারতের বেশির ভাগ খালাসিরা সিলেট থেকে এসে বৃটিশ জাহাজে কাজ করতেন। আয়ান জ্যাক লিখেছেন, গত ২২শে মে নিহত সেনাসদস্য লি রাগবিকে নিয়ে অনেক তোলপাড় হচ্ছে কিন্তু বৃটেনের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সেই বীর শহীদ সিলেটিদের কখনও স্মরণ করা হয়নি। বিন্দুমাত্র স্বীকৃতিও পাননি তারা, স্থান হয়নি ইতিহাসের পাতায়।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024