জাতীয় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দুর্নীতি আর বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিরক্ত হয়ে মানুষ এখন পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে। আর এই পরিবর্তনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মূলত ফেসবুককে। এজন্য একটি ফেস বুক ঠিকানাও (facebook.com/2terms) তারা খুলেছে। ওই ফেসবুক পেজে ঢুকে দেখা যায়, তারা লিখছে ‘পরিবর্তনশীল নেতৃত্ব চাই। একজন দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। সাংবিধানিক আইন চাই। আমাদের পাশে দাঁড়ান- নতুন বাংলাদেশ গড়ি।
‘নট দ্য সেম প্রাইম মিনিস্টার এগেইন অ্যান্ড এগেইন। নো মোর হাসিনা অর খালেদা। উই ওয়ান্ট নিউ লিডার। ম্যাক্সিমাম টু টার্মস। জয়েন আস।’ এই কয়েকটি ইংরেজি বাক্যের মেসেজ মোবাইল ফোনে আসতে থাকে রোববার। এদিন সারাদিন ধরে এ ধরনের মেসেজ পাওয়ার খবর পাওয়া যায় সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে।
নিউ লিডার শিরোনামে মেসেজের বাক্যগুলো থেকে এর উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট। ফেসবুক পেজে আরো লেখা হয়েছে; অনেক হয়েছে, এবার দয়া করে বিদায় নিন। গণতান্ত্রিকভাবে তাদের বিদায় করে ছাড়বো শিরোনামে একটি কার্টুনও রয়েছে পেজে।
সম্প্রতি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনও কেউ দু’বার প্রধানমন্ত্রী যাতে হতে না পারে সে ব্যাপারে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছেন। বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হকের ছবিসহ একটি মন্তব্যও রয়েছে সেখানে। তাতে রফিকুল হক বলেন; ‘আইন করতে হবে কোনো ব্যক্তি পরপর দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না।’ তার এই বক্তব্যের ঠিক পরেই লেখা হয়েছে ১৬ কোটি মানুষকে জানিয়ে দিন, সবাই যেন ব্যারিস্টার রফিকের কথায় একমত প্রকাশ করে।
ফেইসবুকে বিশেষভাবে একটি স্থানে লেখা হয়েছে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া সফর করেছেন। সেই সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও তার বোন শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানার কন্যার ছবি। এর ঠিক নিচেই লেখা হয়েছে আমাদের পারিবারিক বাংলাদেশ। আমাদের আন্দোলনের সবচেয়ে বড় যুক্তি। পেজটিতে এই নব আন্দোলনের শুরুর ক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিলের কথা।
এরপর তারা লিখেছেন, আমরা আমাদের এই দাবির কথা গত ২ বছর ধরে সবাইকে বলে চলেছি, শুরু করেছিলাম এপ্রিল ১০, ২০১১ এ। আমরা সবাই এটা আগে থেকেই চাইতাম। কিন্তু কেউ উচ্চ স্বরে বলতে পারতাম না, ভেতরে খালি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চিন্তা করতাম, এখনো বলতে পারি না, কিন্তু এখন একটু একটু করে শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে এবং ভেতরে চিত্কার করে বলছি “পরিবর্তন চাই”। আমরা ভাই সাধারণ জনগণ, আমরা শাহবাগ না যে পেছনে সরকার আর ছাত্রলীগ থাকবে, আমরা হেফাজত নই যে ধর্মের কথা বলে সরকার উৎখাত করার চিন্তা করি। আমরা সাধারণ মানুষ যারা দেশকে ভালোবাসি। এই আন্দোনের ফল দিয়ে আমাদের পেট ভরবে না, আমরা টাকা পাব না, কিন্তু আমাদের দেশের অনেক ভালো হবে। শুধু একমাত্র দেশের জন্য আমাদের এই আন্দোলন। আমরা হেরে যাব না, আমরা সফল হবই, আমাদের স্বার্থ হলো বাংলাদেশ। আমরা আমাদের দেশের জন্য স্বার্থপর। আমরা গর্ব করে বলতে পারি, আমরা স্বার্থপর, বাংলাদেশ নিয়া আমরা স্বার্থপরতা।
Leave a Reply