বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৮:০০

জামায়াত ছাড়ছেন সিলেটের ব্যারিস্টার রাজ্জাক

জামায়াত ছাড়ছেন সিলেটের ব্যারিস্টার রাজ্জাক

রাজনীতি ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামী ছাড়ছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক! এই নিয়ে দল ও দলের বাইরে ব্যাপক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বহুদিন ধরে। তবে এখন পর্যন্ত সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও আপাতত তিনি জামায়াতের রাজনীতি থেকে রয়েছেন অনেকটা দূরে। জামায়াতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ব্যারিস্টার রাজ্জাক নানা চাপে দল থেকে নিষ্ক্রিয় থাকতে পারেন, দল ত্যাগ করতে পারেন এমন কথা তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক সিলেটের বিয়ানীবাজারের বাসিন্দা। তিনি ঢাকা হাইকোর্টে আইনপেশায় নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত হলেও রাজনীতির মাঠে তেমন সক্রিয় ছিলেন না ব্যারিস্টার রাজ্জাক। মূলত তিনি জামায়াত নেতাদের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা আসার পরপরই আইন অঙ্গনে আলোচনায় আসেন এই নেতা। তার পর থেকে থেমে থাকেননি তিনি। চারদলীয় জোটের অনেক শীর্ষ নেতার মামলা পরিচালনা ছিল তার হাতে। সেই সুবাদে দেশ কাঁপানো একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন।

২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ শীর্ষ নেতাদের মানবতাবিরোধী মামলার বিচারকাজ শুরু হলে ব্যারিস্টার রাজ্জাক তাদের প্রধান আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন।

তাকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেলেও ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশ ত্যাগের পর হতাশা নেমে আসে তাদের মধ্যে। জামায়াত ছাড়ছেন রাজ্জাক এ নিয়ে দলটির একাধিক স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি দল ছাড়তে পারে না, পরিস্থিতির কারণে নীরব থাকতে পারেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের প্রচার বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, হয়তবা জামায়াত ছাড়তেও পারেন, কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা তাকে মামলা-মোকাদ্দমা দিয়ে হয়রানি করবে এই ভয় থেকে তিনি নিজেকে আড়াল করে দল ছাড়তেও পারেন। তিনি আরো বলেন, একে একে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করছে সরকার। একটি প্রকাশ্যে বিবৃতিও দেননি তিনি।

সংকটকালীন জামায়াতের এক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর পাঁচ দিনের মাথায় দেশ ত্যাগ করেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। দেশের বাইরে গিয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে সরকারকে চাপে রেখে কীভাবে জামায়াত নেতাদের রক্ষা করা যায়, সে জন্য তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হয় দলের পক্ষে থেকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দলটির আরেকটি সূত্র বলছে, উল্টো একে একে দলের সব শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে হত্যা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দলটিকেও নিষিদ্ধ করার পথে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের এক সহকর্মী বলেন, দেশের রাজনীতি সার্বিকভাবে স্থিতিশীল না হলে দেশে ফিরবেন না তিনি। নাম গোপন রাখার শর্তে এই সহকারী বলেন, নেতার ব্যাপারে নানা ধরনের কথা-বার্তা শোনা যাচ্ছে। কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা বলা মুশকিল। এর আগে ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কলাবাগান থানায় ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় জামায়াতের ৩২ নেতাকর্মী সমর্থকের সঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাককেও আসামি করা হয়। সেই মামলার পর থেকেই তিনি দেশের বাইরে চলে যান। এরপর এখন পর্যন্ত তিনি আর দেশে ফেরেননি।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হবার পর ২২ নভেম্বর ২০১৫ সালে লন্ডনে আলতাব আলী পার্কে গায়েবানা নামাজে উপস্থিত হয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। সেই সময়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের এমন খবর ছবিসহ প্রকাশিত হয়। তার পর থেকে গত ৭ মাস তাকে লন্ডন বা আমেরিকা এবং কি বাংলাদেশেও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। রাজনীতি অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, ব্যারিস্টার রাজ্জাক জামায়াত ছাড়ছেন, সে জন্য দলটির কর্মকাণ্ডে নেই তিনি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025