শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৫

দেউলিয়ার হতে যাচ্ছে যমুনা ব্যাংক লিঃ

দেউলিয়ার হতে যাচ্ছে যমুনা ব্যাংক লিঃ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শীর্ষবিন্দু নিউজ: ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বেসরকারি খাতের যমুনা ব্যাংক। পর্যায়ক্রমে দেউলিয়া হওয়ার পথে এগুচ্ছে ব্যাংকটি। কারণ হিসবে সামনে ওঠে আসে পরিচালনা পর্ষদের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত, অনিয়ম, দুর্নীতি,  ভুয়া ঋণপত্র (এলসি) খোলা, ঋণ জালিয়াতি ও অস্তিত্বহীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ সহ আরো অন্যান্য।

সূত্র মতে জানা যায়, একমাত্র দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণেই যমুনা ব্যাংকটিতে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। আর ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে ব্যাংকটির আমানত।  যমুনা ব্যাংকের মাধ্যমে বিতর্কিত বিসমিল্লাহ গ্রুপের কয়েকটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন সক্ষমতার বেশি রফতানি দেখিয়ে অতিরিক্ত নগদ অর্থ তুলে নিয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে বিসমিল্লাহ গ্রুপ যমুনা ব্যাংক থেকে ১৬৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে হাতিয়ে নিয়েছে। এর বিপরীতে ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত জামানত নেই বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোজাম্মেল হোসেন ও দিলকুশার শাখা ব্যবস্থাপককে বাধ্য হয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে হয়েছে। ব্যাংকের গুলশান শাখায় সম্প্রতি চেক জালিয়াতির ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থার মধ্যে ব্যাংকটিতে অনিয়ম জালিয়াতি বেড়েই চলেছে। ফলে ব্যাংকটি পর্যায়ক্রমে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

আরো জানায়, সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংকের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের বিস্তর অনিয়ম পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে যমুনা ব্যাংকও রয়েছে। যমুনা ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে নিরীক্ষিত প্রতিবেদনের সঙ্গে তার বেশিরভাগ তথ্যেরই কোনো মিল নেই। ব্যাংকের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদের কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। তবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান সম্প্রতি বলেন, ‘কোনো ব্যাংক অনিয়ম করে পার পাবে না। যেসব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন করছে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক পিছপা হবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় ব্যাংকটির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হচ্ছে নানা অনিয়মও। পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দূরত্ব ও মতপার্থক্যের সুযোগ নিচ্ছে মধ্যবর্তী অন্য আরেকটি দল। যারা পদাধিকার বলে নয়, বিশৃঙ্খলার সুযোগে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছে। সম্প্রতি ভুয়া এলসি ও শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানি বাবদ প্রায় আট কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে ব্যাংকের কর্মকর্তারা।এ অভিযোগে ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযুক্তরা হলেন- যমুনা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে যমুনা ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ) মো. বেলাল হোসেন, একই শাখার এভিপি একেএম শাহ আলম এবং সাবেক এফএভিপি (বর্তমানে যমুনা ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের এভিপি) বিপ্লব কুমার চক্রবর্তী। সূত্র মতে, মেসার্স রায়হান প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান  এই ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩টি এলসি খোলে। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ইউসুফ হোসাইন ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ১৩টি এলসি খোলেন। এর মধ্যে দুটি এলসির টাকা প্রায় দেড় বছর পর পরিশোধ করা হলেও বাকি ১১টি এলসির বিপরীতে ৪ কোটি ৬৫ লাখ ২২ হাজার ২৪৮ টাকা আত্মসাৎ করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এমনকি এসব ক্ষেত্রে মঞ্জুরিপত্রের শর্তভঙ্গ করে এলসি খোলা হয়েছে। এছাড়া শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানির নামে প্রতিষ্ঠানের এমডি ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪৩ হাজার ৩০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পেরেছে। অভিযুক্ত চারজন পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোট ৮ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৭৮ টাকা জাল কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র মতে, যমুনা ব্যাংকের অন্য অনিয়মগুলোর মধ্যে রয়েছে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন,শাখায় হিসাব খোলার আগেই ঋণ অনুমোদন, একই পরিবারভুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন, শাখার বিরূপ মন্তব্য সত্ত্বেও ঋণ অনুমোদন এবং ব্যাংকের সক্ষমতার চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ।

 

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024