দেশের বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশে আসলে ভিআইপি সেবা পাবেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশের বিমানবন্দরে সেবার মান উন্নয়ন ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
আরেকটি সেবা আমরা চালু করতে যাচ্ছি- একজন ভিআইপি এয়ারপোর্টে যেসব সুবিধা পান, লাউঞ্জ ব্যবহার ছাড়া আমরা সব সুবিধাই তাদের দেবো। গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, একজন ভিআইপি যখন এয়ারপোর্টে যান তখন তার লাগেজ নিয়ে একজন সঙ্গে থাকেন, চেক-ইন করার সময় সঙ্গে একজন থাকেন, ইমিগ্রেশন করার সময় পাশে একজন থাকেন। প্রাথমিকভাবে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের কর্মীদের টার্গেট করেছি। ইউরোপের কর্মীদের পরে করবো।
প্রথম স্তরে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া এবং ফেরত আসা একজন কর্মী ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাবেন। লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দেয়ার বিষয়ে আমরা পরে চিন্তা করছি, এটা অনেক পরের কাজ। আগামী দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে আমরা এটা করবো, বিমানবন্দরে যাওয়ার পর একজন কর্মীর যে অসহায় অবস্থা তৈরি হয় সেটি দূর করবো।
তিনি বলেন, কর্মী কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন, চেকইন কীভাবে করবেন, ফর্ম পূরণ করা লাগলে কীভাবে করবেন, ইমিগ্রেশনে কোনো কাগজ চাইলে কীভাবে সেটি করবেন এসব কাজে নিয়োজিত থাকবে বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক।
দরকার পড়লে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ট্রেনিং দিয়ে নতুন লোক নিয়োগ করবো। আমরা এটি দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করবো। একজন প্রবাসী যেন কোনো অবস্থাতেই এয়ারপোর্টে হয়রানির শিকার না হন, অপমানিত বোধ না করেন এই ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে। এটা আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করে ছাড়বো।
উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যেসব প্রবাসীরা জীবন এবং জীবিকার রিক্স নিয়ে বিদেশে জেল খেটেছেন তাদের এই সেক্রিফাইস আমরা সবাই মনে রেখেছি।
তাই আজকে তাদের বিষয়ে আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ৫৭ জন যারা ফেরত এসেছেন তাদের বাইরে আমরা মোট ৮৭ জনকে এনলিস্ট করেছি। এই ৮৭ জনকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসী কল্যাণে যেসব স্কিম আছে তার অধীনে সাহায্যের পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কল্যাণ বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চাকরি কিংবা ব্যবসা করাসহ অন্য যেকোনো দেশে, যেখানে তারা যেতে পারবেন সে ব্যবস্থা করা হবে। মোট কথা, তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে আগে শুধুমাত্র ঋণ পরিশোধের জন্য প্রবাসীরা টাকা পাঠাতে পারতেন। এখন থেকে প্রবাসীরা এই ব্যাংকে ঋণ পরিশোধের মাধ্যমে রেমিট্যান্সও পাঠাতে পারবে, এ ব্যবস্থা করেছি।
এই বিষয়ে বেসরকারি সিটি ব্যাংক আমাদের সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের এতদিন যে ঋণ দিতো, তাদের সঙ্গে দেশের বৃহৎ আরও ১২ ব্যাংকও প্রবাসীদের ঋণ দেবে।
এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। প্রবাসীদের অনেক বেশি ঋণের প্রয়োজন আছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি ঋণ দেয়ার জন্য এক ধরনের গ্যারান্টির প্রয়োজন আছে, যেটা বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, খুব দ্রুত এই ক্রেডিট গ্যারান্টির বিষয়ে সমাধান হবে। তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আরও কোনো শাখা না খুলে আমরা সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকে প্রস্তাবনা দিয়েছি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেসব জায়গায় সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক আছে, সেখানে গ্রাহকরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা পাবে।
Leave a Reply