বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৬

ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এতিমখানা গাজা

ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এতিমখানা গাজা

ইসরাইলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজা। মৃত্যুর মিছিল চলছেই। চারদিকে নিঃসঙ্গতা, হাহাকার। মানবিক বিপর্যয়ও একেবারে চরমে। খাদ্য-পানির সংকটে দিশেহারা ফিলিস্তিনিরা।

গাজা যুদ্ধে চরমমূল্য দিচ্ছে শিশুরাও। অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে তারাও। মাথার ওপরে ছাদ নেই। মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমানোর সুযোগটুকুও নেই। বাবা-মাকে হারিয়ে ধ্বংসস্তূপেই অসহায়ের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশুরা।

ইসরাইলের নির্বিচার আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপকসংখ্যক শিশু এতিম হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো। মাত্র ৫৩৪ দিনেই অনাথ শিশুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৩৮৪ জনে। আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এতিমখানায় পরিণত হয়েছে গাজা।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৫৩৪ দিন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৩৯ হাজার ৩৮৪ শিশু তাদের বাবা অথবা মা কিংবা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার শিশু বাবা ও মা উভয়কেই হারিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘এই শিশুরা অত্যন্ত দুঃখজনক অবস্থায় বসবাস করছে। অনেকেই ছেঁড়া তাঁবুতে বা ধ্বংস হওয়া ঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেখানে সামাজিক সেবা ও মানসিক সহায়তার কোনো উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এতিমখানা এখন গাজা। যার ফলে নতুন সংকটের মুখোমুখি হয়েছে উপত্যকাটি।’ বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরাইলি আক্রমণে অন্তত ১৭ হাজার ৯৫৪ শিশু নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ২৭৪ জন নবজাতক এবং ৮৭৬ জন এক বছরের কম বয়সী শিশুও রয়েছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘১৭ জন শিশু বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় নেওয়া তাঁবুতে তুষারে জমে মারা গেছে। এছাড়া ৫২ জন শিশু ক্ষুধা ও পুষ্টিহীনতায় মারা গেছে।’

৬০ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতা এবং অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে যা তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি। ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) শনিবার জানিয়েছে, ১৮ মার্চ ইসরাইল যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার পর থেকে গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে।

চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরাইলের সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি হয়। কিন্তু দখলদাররা চুক্তির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে নতুন করে হামলা শুরু করে গাজায়। এ ছাড়া গাজায় প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতেও বাধা দেয় তারা। নতুন করে চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।

এ ছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন আরও অনেকে। ইসরাইল ভারী সরঞ্জাম প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা এসব মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। শনিবারেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী।

এ দিন ভোর থেকে গাজাজুড়ে হামলা চালায় তারা। এতে কমপক্ষে ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেইত হানুনে বিমান হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলার ফলে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৬৬৯ জনে। যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ২২৫ জন।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025