শীর্ষবিন্দু নিউজ: পোশাক শিল্পে নতুন রপ্তানি আদেশ না থাকায় হতাশায় পড়ছেন উদ্যোগক্তরা। ফলে নতুন পণ্য উৎপাদনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীও ছাঁটাই করছে।
এদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রপ্তানি আদেশ বাতিলের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। কমেছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা। তৈরী পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র তথ্যমতে, গেল বছর রপ্তানি আদেশ কমেছে প্রায় ৩০-৩৫%।
কারখানা মালিকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত কয়েক মাস ধরে ঠিক সময়ে পণ্য জাহাজীকরণ করতে পারছেন না। কয়েকগুণ খরচ বেশি দিয়ে পণ্য পরিবহন করলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। ঠিক সময়ে পণ্য না পৌঁছাতে পারায় নাখোশ ক্রেতারা। তাছাড়া একই কারণে নিরাপত্তার অভাবে বিদেশী ক্রেতারা তাদের ব্যবসাকে অন্য দেশে স্থানান্তর করছেন। এছাড়া শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বছরে টানা হরতাল-অবরোধে শিল্পটির সাপ্লাই চেইন ধসে পড়েছে বলেও মন্তব্য তাদের।
বিজিএমইএ বলছে, ১লা নভেম্বর থেকে ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩৭ দিনই শিল্পটি রাজনৈতিক অস্থরতার কবলে পড়েছে। একদিন উৎপাদন ব্যাহত হলে ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয় এই শিল্পে। সেই হিসেবে উৎপাদন বিনষ্ট হওয়ায় প্রায় ৯২৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছে সংগঠনটি।
মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম জানান, যেসব কারখানার অগ্রিম রপ্তানি আদেশ ছিল তা এখন শেষ হওয়ার পথে। কারখানাগুলো শ্রমিকদের বসিয়ে না রেখে জুন-জুলাই মাসের রপ্তানি আদেশের কাজ এখনই শেষ করে ফেলছেন তারা। তিনি বলেন, এরই মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার পাশাপাশি অনেক বড় প্রতিষ্ঠানও সাব কন্ট্রাকের জন্য দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছে। সাব কন্ট্রাক না পেয়ে অনেকে অতিরিক্ত শ্রমিক ছাঁটাই করছে বলে জানান তিনি।
তিনিও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এমন ধারা কাটিয়ে উঠতে না পারলে খাতটিতে স্থবিরতা নেমে আসতে পারে। বিজিএমইএ’র আরেক নেতা জানান, জুন-জুলাই মাসের রপ্তানি আদেশের কাজ ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে করছেন তারা। রপ্তানি আদেশ কম থাকায় শ্রমিকদের কাজ দিতে পারছেন না তারা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও তিন মাসের একটা বড় দূরত্ব তৈরি হবে। সে সময় রপ্তানি আদেশ ৭০ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। আর এমন হলে খাতটিতে স্থবিরতা নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা তার।