শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহবান জানিয়ে এক অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি। নাম ও ছবিসহ একই অডিও বার্তায় দেখা যায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশে ইসলাম সুদৃঢ় করতে বিশেষভাবে আহবান জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মুসলিম ভাইয়েরা, ইসলামের বিরুদ্ধে যারা ক্রুসেড ঘোষণা করেছে, তাদের প্রতিরোধ করার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি। উপমহাদেশ ও পশ্চিমের শীর্ষ ক্রিমিনালরা ইসলামের বিরুদ্ধে, ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করছে, মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যাতে আপনাদেরকে তারা অবিশ্বাসীদের দাসে পরিণত করতে পারে। জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামসহ উগ্র ইসলামী দলগুলোও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকার ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
বার্তায় জাওয়াহিরি পরিচয় দেয়া এক ব্যক্তিকে আরবিতে বলতে শোনা যায়, পাশাপাশি ইংরেজি সাবটাইটেলে দেখা যায় তার তর্জমা। বাংলাদেশকে বিরাট এক জেলখানা হিসাবে তুলে ধরে এই বার্তায় বলা হয়, এই দেশে মুসলমানদের সম্মান আজ ভূলুণ্ঠিত। ২৮ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই ক্লিপের প্রথম সোয়া দুই মিনিট গত বছর মে মাসে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ এবং তাদের তুলে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কিছু আলোকচিত্র দেখানো হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে জাওয়াহিরির বক্তব্য।
জাওয়াহিরির নামে প্রচারিত এই বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ আজ এমন এক ষড়যন্ত্রের শিকার, যাতে ভারতীয় এজেন্ট, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনা নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষমতালোভী, বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিবিদরাও জড়িত। ম্যাসাকার বিহাইন্ড এ ওয়াল অব সাইলেন্স শিরোনামে এই বার্তায় বলা হয়, মুসলমানদের ওপর একটি নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো হত্যাকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সত্য গোপন করছে। আর এই রক্ত ঝরছে বাংলাদেশে। আর উপমহাদেশের, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মুসলিম উম্মাহ এই ষড়যন্ত্রের মূল শিকার বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
বার্তায় বলা হয়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত ও আফগানিস্তানে আজ যা হচ্ছে- তা সেই শয়তানি পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরই প্রাথমিক পর্যায়। কাল যারা বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞ চালালো, আজ তারাই পকিস্তানে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। একইভাবে বাঙালির সম্মান রক্ষার ধুঁয়া তুলে যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল, তারাই আজ বাঙালির বিশ্বাস, সম্মান, জীবন ও সম্পদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
জাওয়াহিরি বলেন, তারা দাবি করে, ইসলাম ও এই উপমহাদেশের মুসলামনদের রক্ষায় ৬০ বছরের বেশি সময় আগে তারা পাকিস্তান সৃষ্টি করেছিল। আর আজ আমরা যে পাকিস্তান দেখি, সেখানে শরিয়ার কোনো স্খান নেই। একইভাবে তারা দাবি করে ৪০ বছর আগে তারা বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছিল স্বাধীনতা এবং জনগণের মুক্তির জন্য। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশ আজ পরিণত হয়েছে বিরাট এক কারাগারে, যেখানে মুসলমানদের সম্মান ও পবিত্র স্থান অপবিত্র করা হচ্ছে। ক্রুসেডার কসাইদের হয়ে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে হত্যা-নির্যাতন।
জাওয়াহিরি- যিনি একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছেন বলে ধারণা করা হয়- এই বার্তায় ইসলামের সত্যিকারের নেতাদের কাছে জড়ো হয়ে তাদের সমর্থন ও সুরক্ষা দেয়ার জন্য বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশে ইসলামের মৌল বিশ্বাস ও রসুলের (স.) বিরুদ্ধে আজ যে অপরাধ ঘটানো হচ্ছে, তার বীজ বপণ করেছে সেই ক্রিমিনালরাই। পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়া তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ঠেকানো বা পাকিস্তানি সামরিক শাসন থেকে মুক্তি- কোনোটাই এর মূল লক্ষ্য ছিল না। গত বছরের হেফাজতকাণ্ডের সূত্র ধরে এই বার্তায় রাজপথে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। আর বাংলাদেশ সরকারকে উল্লেখ করা হয়েছে ইসলামবিরোধী, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার হিসাবে।
[youtube id=”8pqby3XMZOc” width=”600″ height=”350″]
[youtube id=”sYMmCscSgxo” width=”600″ height=”350″]