শীর্ষবিন্দু নিউজ: পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়ার পর ধরা পড়া নিষিদ্ধঘোষিত জেএমবির দণ্ডপ্রাপ্ত নেতা হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসান (৩৫) বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হাফেজ মারা যান বলে দাবি করেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা। জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) মজলিসে শুরার সদস্য হাফেজ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন।
গতকাল রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে এবং এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে জেএমবির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন নেতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। ছিনিয়ে নেওয়া তিন জঙ্গি হলেন জেএমবির মজলিসে শুরা সদস্য সালাউদ্দিন ওরফে সালেহীন (৩৮), হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসান ও জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিজান ওরফে বোমা মিজান (৩৫)। বিকেল নাগাদ টাঙ্গাইল থানার পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া এই তিন জঙ্গির মধ্যে হাফেজ মাহমুদ ও তাঁর তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।
এই তিন জঙ্গিকে মুক্তাগাছা থানার একটি বোমা হামলা মামলায় ময়মনসিংহের আদালতে হাজির করানোর জন্য গতকাল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পথে ত্রিশাল ও ভালুকার মাঝামাঝি সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাক ও মাইক্রোবাস দিয়ে পুলিশের প্রিজন ভ্যানটি গতিরোধ করে জঙ্গিরা। তারা বোমা মেরে ও গুলি করে মুহূর্তে ধরাশায়ী করে চার পুলিশকে (চালকসহ)। এরপর ডান্ডাবেড়ি পরা তিন জঙ্গিকে মুক্ত করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এঁদের মধ্যে সালাউদ্দিন ও হাফেজ মাহমুদ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ও বোমা মিজান যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাঁদের বিরুদ্ধে এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় আতিকুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন। আহত হন আর্মড পুলিশের সুবেদার হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল সোহেল রানা। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের একটি দল গভীর রাতে হাফেজকে নিয়ে মির্জাপুরের বেলতৈল সিরামিক এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায়। ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে সেখানে পুলিশের ওপর একদল অস্ত্রধারী হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের সময় হাফেজ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তাঁর লাশ মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। এই তিন সদস্য হলেন সখীপুর থানার কনস্টেবল মোজাম্মেলক হক, গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল আসাদ মিয়া ও গোলাম মওলা। তাঁদেরকে টাঙ্গাইলের পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কুমুদিনী হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, ভোর পাঁচটার কিছু পরে রাকিবকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।