গুজবে উত্তেজিত হয়ে বৌদ্ধরা দলবেঁধে হামলা চালাচ্ছে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে। ২০ মার্চ কট্টর বৌদ্ধরা মধ্যাঞ্চলীয় মেইখতিলা টাউনে দাঙ্গার সূত্রপাত করার পর থেকে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এ অঞ্চলে বসবাসরত অনেক মুসলিম বাসিন্দাই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং ধর্মীয় উপসনালয় (মসজিদ) ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে কেউ শরণারর্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে, কেউবা বন্ধু বা আত্মীয়দের বাড়িতে আত্মগোপন করেছে। তবে তাদের মধ্যে অনেককেই হত্যাও করা হয়েছে। মধ্যাঞ্চলের সিত কউয়িন গ্রামের দুই হাজার বাসিন্দার মধ্যে মাত্র একশ’ জনের মতো ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিল। হামলার পর এদের অধিকাংশই ভয়ে এলাকা ছেড়ে অজানার পথে পা বাড়িয়েছে।
মুসলিমবিরোধী উসকানিতে উত্তেজিত হয়ে ওঠে সাধারণ বৌদ্ধরা। টেলিফোন, ফেইসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিচালিত “৯৬৯ আন্দোলন” এসব গুজব সাধারণ বৌদ্ধদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়। শুক্রবার গ্রামের অবশিষ্ট মুসলিমদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনই এক মুসলিম দোকানির কথা বলতে গিয়ে সিত কিউয়িনের ২৪ বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক অং কো মাইন্ত বলেন, তারা কোথায় আছে আমরা জানি না, হামলাকারীরা আসার আগ মুহূর্তে সে পালিয়ে যায়। সাম্প্রদায়িক এই দাঙ্গার সূত্রপাত করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪২ জন নিহত হয়েছে। এরপর আরো অন্তত ১০টি শহর ও গ্রামে তারা দাঙ্গা বাঁধিয়েছে।
বুদ্ধ থেকে নেওয়া এই তিনটি সংখ্যা বুদ্ধের বিভিন্ন রূপ প্রকাশ করে, এরমধ্যে তার শিক্ষা ও ভিক্ষুত্ব অন্যতম। কিন্তু মিয়ানমারে এটি মুসলিমবিরোধী জাতীয়তাবাদী উগ্রপন্থার প্রতিনিধিত্ব করছে। এই আন্দোলন বৌদ্ধদের মুসলিম পরিচালিত দোকানপাট ও সেবা বয়কট করার আহ্বান জানায়। চারদিন আগে থেকে সিত কউয়িনে সমস্যা শুরু হয়। ৩০টি মোটরসাইকেলে চড়ে বহিরাগত কিছু লোক গ্রামের ভিতর দিয়ে যেতে যেতে মুসলিম প্রতিবেশীদের বয়কট করার আহ্বান জানায়। এরপর তারা একটি মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন একসারি দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ধ্বংস করে। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, গুজবে উত্তেজিত হয়ে তারা এখানে আসে।”
তিনজন বৌদ্ধভিক্ষুর নেতৃত্বে ত্রিশটি শক্তিশালী গোষ্ঠী শুক্রবার একটি মসজিদের দিকে রওয়ানা হয় হলে পু্লিশ বাঁধা দেয়। পুলিশি বাঁধার মুখে ছু্রি ও লাঠিধারী এসব দাঙ্গাকারী ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ কমান্ডার ফোনি মিন্ত বলেন, এ ধরনের আর কিছু হতে দেব না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গতকাল পুলিশকে কর্তৃত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার বলেছেন, মেইখতিলার সাম্প্রতিক সহিংসতায় রাষ্ট্রীয় যোগসাজশ থাকার অভিযোগ পেয়েছেন তারা। বিশ্ব মুসলিম সমাজ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন মিয়ানমারের বিরোধী আপষহীন নেত্রী অং সান সূচীর দিকে। যেখানে শান্তি প্রতিষ্টার জন্য তাকে গৃহবন্দী থাকছে হয়েছে নিজ দেশের মাটিতে। সেখানে তিনি কিভাবে চুপ থাকছেন এই বর্বরচিত হামলার বিপক্ষে কথা না বলে। তবে কি এদের অপরাধ এরা অঘষিত মুসলিম বার্মিজ নাগরিক?
Leave a Reply