আরব বিশ্বে অন্যতম ধর্মীয় রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে সৌদি আরব। রাজতান্ত্রিক শাসন বিরোধী রক্ষণশীল সুন্নি মতবাদের এ ধর্মীয় দলটি সৌদি আরবে সমর্থক বাড়াচ্ছে – এমন আশঙ্কা থেকে শুক্রবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নেয়।
ওদিকে, সিরিয়ায় শিয়া মতাবলম্বী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে এতদিন সমর্থন দিলেও অন্যতম বিদ্রোহী দল ‘নুসরা ফ্রন্ট’ ও ‘ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। সৌদি আরব চলছে রাজতান্ত্রিক শাসন পদ্ধতিতে। তবে রাজতন্ত্রের নীতি নির্ধারকরা পাশের দেশ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের শাসনের বিরোধী। মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক ইসলাম মতাদর্শেরও বিরোধীতা আছে সৌদি কর্তৃপক্ষের।
অন্যদিকে, মিশরের ব্রাদারহুড আরব বসন্ত শুরুর পর থেকে রাজতন্ত্র বা গোষ্ঠী শাসনের বিরোধী সৌদি আরবেও নিজেদের মতাদর্শের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে যা বর্তমান রাজপরিবারের শাসনের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এ ধরনের যুদ্ধে গমনের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী কারাবাসের শাস্তি রেখে গত মাসে রাজকীয় অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়া ব্রাদারহুড নেতা মোহাম্মদ মুরসিকেও বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত করে দেয় মিশরের সেনাবাহিনী। গত বছরের জুলাইয়ে মুরসির ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে রাজপথে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ করতে থাকা মুরসির দল ব্রাদারহুডকে আন্ডারগ্রাউন্ডে যেতে বাধ্য করে সেনা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন। একটি পুলিশ স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৬ জন নিহতের ঘটনায় মুসলিম ব্রাদারহুডকে দায়ী করে এর জন্য গত ডিসেম্বর দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে প্রশাসন। অবশ্য ব্রাদারহুড আত্মঘাতী বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছিল এবং এর সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছিল।
সৌদি আরবের অন্তত ১২শ’ নাগরিক সিরিয়ায় শিয়া নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে। তরে রণাঙ্গণ থেকে ফিরে এসে এসব নাগরিক অভ্যন্তরীন শাসন ব্যবস্থার জন্য হুমকি হওয়ায় তাদেরকে ভিনদেশে যুদ্ধে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করছে সরকার। ২০১১ সালে গণবিক্ষোভের মুখে স্বৈরশাসক হুসনি মুবারক শাসনের অবসানের পর থেকে মিশরে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনেই এগিয়ে ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড।