ইসলাম ধর্মে সুপরিচিত ইউনূস নবীকে ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে জনাহ নামে ডাকা হয়। ধর্ম প্রচারে গিয়ে বড় মাছের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। মাছের পেটে কয়েকদিন অবস্থানের পর তিনি আবার জীবিতই ফিরে এসেছিলেন বলে ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্ম্বাবলম্বীদের বিশ্বাস। ইরাকে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের শাসনকালে ১৯৯০ সালে মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। সারা বিশ্ব থেকে পুণ্যার্থীরা সেখানে যেতেন।
বুক অব জনাহ এর বর্ণনা মতে, সৃষ্টিকর্তার আদেশে ধর্ম প্রচারের জন্য নিনেবাহ অঞ্চলে যাওয়ার পথে ‘ইউনূস নবী’র নৌকা ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে তিনি লক্ষ্যস্থল থেকে ভিন্নপথে পরিচালিত হন। ঝড়ের এক পর্যায়ে বড় একটি মাছ (তিমি) তাকে খেয়ে ফেলে। কয়েক দিন মাছের পেটে জীবিত অবস্থানের পর নিনেবাহ অঞ্চলেই তিনি মাছের পেট থেকে বেরিয়ে আসেন। আলোচিত নিনেবাহ অঞ্চলটিও ইরাকের মসুল রাজ্যে অবস্থিত।
২০ লাখ মানুষের বসতি ইরাকের মসুল শহরে ধর্মীয় বহুত্বের চর্চা হয়ে আসছিল কয়েক শতাব্দি ধরে। তবে আইএসআইএল জঙ্গিরা ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেখান থেকে খ্রিস্টান অধিবাসীদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে। মসুল অঞ্চলের দখল নেয়ার পর সেখানকার খ্রিস্টানদেরকে তাদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইএসআইএল। অন্যথায় খ্রিস্টানদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের নির্দেশ দেয় তারা। ধর্মান্তরিত না হলে তাদেরকে জরিমানা কিংবা মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে শাসিয়েছে আইএসআইএল।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, শুক্রবারও জঙ্গিরা অন্য দু’জন নবীর সমাধি ধ্বংস করেছে। একইদিন আরেকজন শিয়া ইমামের সমাধি মিশিয়ে দিয়েছে তারা। এছাড়া নারীদেরকে আপাদমস্তক আবৃত করে চলাচলের নির্দেশনাও দিয়েছে জঙ্গিরা। ধর্মীয় ইমামদেরকে জুমা’র নামাযের বক্তব্যে এসব নির্দেশনা প্রচারে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
স্থানীয় অধিবাসীরা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষের কিছু ঘরবাড়িও বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে জীবনের ঝুঁকির কারণে কেউ এনিয়ে কথা বলছে না। একই দিন ইমাম আওন বিন আল হাসান মসজিদ নামের আরেকটি স্থাপনা ধ্বংস করে জঙ্গিরা। মসুল অঞ্চলে বেশকিছু শিয়া তীর্থস্থানও একইভাবে ধ্বংস করেছে তারা।