ব্রিটিশ সরকারের অর্থে পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম বিবিসি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা নিয়ে সংকটে পড়েছে। শিশুদের ওপর এ সংস্থার সাবেক ব্রডকাস্টার জিমি স্যাভাইল-এর যৌন নির্যাতনের ঘটনা ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ সংকটের সূচনা হয়েছে। বিবিসি নিজেই প্যানোরামা নামের অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রচার করেছে।
‘জিমি স্যাভাইল –হোয়াট দ্যা বিবিসি নিউ’ নামে প্রচারিত এ অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, শিশুদের যৌন নির্যাতনেরে সঙ্গে পরলোকগত স্যাভাইল জড়িত আছেন বলে চার দশক আগেই সন্দেহ করা হয়। ৪০ বছর আগে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি রেডিও ওয়ানের প্রযোজকদের সঙ্গে স্যাভাইলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়।
বিবিসিতে প্রচারিত বিশেষ প্যানোরামায় যৌন নির্যাতনে শিকার নারীদের আইনজীবী লিজ দুক্স উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, যৌন নির্যাতিত এ সব মানুষ যেসব আলামত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন তার ভিত্তিতে বোঝা যাচ্ছে, বিবিসির ভেতরেই একটি শিশু যৌন নির্যাতনকারী চক্র গড়ে উঠেছিল।
জিমি স্যাভাইলের দুষ্কর্ম প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে এক সময় নিউজ নাইট নামের একটি অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ করে দিয়েছিল বিবিসি। বিবিসির আইনজীবীরা এ সংক্রান্ত ইমেইল পাঠানোর প্রচেষ্টা আটকে দেয়।
বিবিসি এর আগে দাবি করেছিল,বাইরের চাপের মুখে নয় বরং সম্পাদকীয় নীতির কারণে এ অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ রাখা হয়। অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধ রাখার এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সম্পাদক পিটার রিপ্পন। এ অনুষ্ঠান কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক ছিলো না বলে তা প্রচার করা হয়নি বলে একটি ব্লগে জানিয়েছেন রিপ্পন।
এদিকে, বিবিসির প্রবীণ সাংবাদিক জন সিম্পসন প্যানোরামাকে বলেন, যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে বিবিসি।
স্যাভাইলসহ তার সঙ্গে জড়িত অন্যদের যৌন নির্যাতন চালানোর বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত করেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। এ তদন্তের মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার দুই শতাধিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেছে।
এদিকে,এ সংক্রান্ত মামলার আইনজীবী অ্যালেন কলিন্স বলেছেন, বিশ্বাসযোগ্য যে সব সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে স্যাভাইল শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন করে যাচ্ছেন এ বিষয়টি তার সহকর্মীরা ভালভাবে জানতেন। ১৯৬০-এর দশকের এ সব শিশু নির্যাতনের কোনো কোনো ঘটনা বিবিসি’র দফতরেই ঘটেছে।
Leave a Reply