শরীর স্বাস্থ্য ডেস্ক: ওভারিয়ান টিস্যু প্রতিস্থাপনের পর বিশ্বে এই প্রথম কোনও মহিলা সুস্থ সন্তানের জন্ম দিলেন, যাঁর ওভারিয়ান টিস্যুটি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল কৈশোরেই। মেডিক্যাল বিজ্ঞানে এটাকে বড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
বছর আঠাশের এই মহিলার ওভারিয়ান টিস্যুটি ছোটবেলাতেই সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। দু-বছর আগে তা প্রতিস্থাপন করা হয়। এর পরেই স্বাভাবিক ভাবে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা।
এর আগে সফল ভাবে সংরক্ষিত ওভারি টিস্যু প্রতিস্থাপন হলেও, সেটি প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার থেকে নেওয়া হয়েছিল। তবে, এ বারই প্রথম কোনও কিশোরীর ওভারিয়ান টিস্যু প্রতিস্থাপন করে সাফল্য মিলেছে। যে সময় এই ওভারিয়ান টিস্যুটি সংরক্ষিত হয়েছিল, তখন কিশোরীর বয়স ছিল ১৩ বছর ১১ মাস। তবে, ওভারি টিস্যু সংরক্ষণের সময়, পরিণত ডিম্বাণু উত্পাদন শুরু হয়ে গিয়েছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন ডাক্তাররা।
সম্প্রতি হিউম্যান রিপ্রোডাকশান জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, ক্যানাসারের কারণে বা কেমোথেরাপিতে কোনও মহিলার ওভারি নষ্ট হয়ে গেলে, প্রতিস্থাপনের পর তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই মা হতে পারবেন।
কঙ্গোর এই মহিলার বয়স যখন মোটে এগারো, ব্লাড ক্যানসারের চিকিত্সার জন্য তাঁকে নিয়ে যেতে হয় বেলজিয়ামে। ভাইয়ের থেকে অস্থিমজ্জা নিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হয়। সেসসয় ইমিউন সিস্টেমটাকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে কেমোথেরাপির দরকার হয়। অস্থিমজ্জাকে বাঁচাতে ডান দিকের ডিম্বাশয়টি সেসময় বাদ দিয়ে, সংরক্ষণ করা হয়।
এরপর, তাঁর বয়স ১৫ পেরোলেও ঋতুচক্র শুরু হয়নি। যদিও নারী অঙ্গের বিকাশ স্বাভাবিকই ছিল। ফলে, ডাক্তাররা হরমোন থেরাপির পরামর্শ দেন। কিন্তু, দশ বছর পরেও কিছু হয়নি। তাঁর বয়স যখন ২৫, তিনি বিয়ে করেন। Erasme Hospital-এ গেলে, ডাক্তাররা তাঁর কেস হিস্ট্রি শুনে সংরক্ষিত ওভারিয়ান টিস্যু প্রতিস্থাপন করেন। হরমোন থেরাপি বন্ধ করা হয়। ফলপ্রসূ হয় এই চিকিত্সা। অস্ত্রোপচারের পাঁচ মাস পর প্রথম ঋতুচক্র শুরু হয় যুবতীর। গত নভেম্বরে তিনি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।