শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের আদালতে সোমবার মুসা বিন শমসেরের মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তারপক্ষে আইনি লড়াইয়ে লড়ছেন ইংল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের আইনি প্রতিষ্ঠান টনি ব্লেয়ার অ্যাসোসিয়েটস। সঙ্গে আছে আরও তিন প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী।
অন্যদিকে সুইস কর্তৃপক্ষের পক্ষে লড়ছেন ব্যাংকের নিজস্ব আইনজীবীরা। ২০০৮ সালে মুসা বিন শমসেরের সুইস ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট জব্দ হয়। ওই সময় তার অ্যাকাউন্টে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
জব্দ করার পর ওই বছরই মুসা অর্থ ফেরত পেতে সুইস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ ৬ বছর পর সুইস আদালতে সোমবার এ মামলার শুনানি হবে। শেষ পর্য্যন্ত মামলায় জয়ী হবেন বলে আশা করছেন বাংলাদেশের মুসা বিন শমসের। রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত মুসার জনশক্তি প্রতিষ্ঠান ড্যাটকো লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তারা জানান, ২০১৪ সালের বছরের ১৫ ডিসেম্বর সুইস আদালতে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা পিছিয়ে ১৫ জুন নির্ধারণ করা হয়।
ড্যাটকো লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক এটিএম মাহাবুব মোর্শেদ শনিবার বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ১৫ জুন সুইজারল্যান্ডের আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সুইস ব্যাংকে আমাদের চেয়ারম্যানের (মুসা বিন শমসের) টাকা অবমুক্ত করাতে টনি ব্লেয়ার অ্যাসোসিয়েটসসহ তিনটি কোম্পানি আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। মুসা বিন শমসেরের বরাত দিয়ে ডেটকো-এর ব্যবস্থাপক মিনহাজুর রহমান চৌধুরী বলেন, সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহযোগিতা করলে জয় হবেই।
সুইস ব্যাংক থেকে ওই টাকা অবমুক্ত করতে পারলে পুরো টাকাই তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন। বিদেশে ব্যবসা করলেও মুসা বিন শমসের বাংলাদেশে জনশক্তি রফতানির পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সুইস ব্যাংক থেকে এ অর্থ ফেরত এলে দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন হবে, বলেন তিনি।
চলতি বছরের ৭ এপ্রিল মুসা বিন শমসের তার আইনজীবী নূর হোসেনের মাধ্যমে ১৬ পৃষ্ঠার সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, সুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) জব্দ রয়েছে। জব্দ রয়েছে তার মূল্যবান হীরকখচিত কলমসহ ৯০ কোটি টাকার ব্যবহার্য জুয়েলারিও। বর্তমানে এসব সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, মুসা বিন শমসের বিলাসী জীবন এবং অর্থ-সম্পদ সম্পর্কে অবিশ্বাস্য সব তথ্য প্রচলিত রয়েছে। তিন দশক ধরে গণমাধ্যমে এসব তথ্য প্রচার হলেও এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ ছিলো না। সম্পদ বিবরণীতে মুসা বিন শমসের উল্লেখ করেছেন, সুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থের উৎস এসেছে আর্মস এবং ক্রুড অয়েল ব্যবসা থেকে। তবে সুইস ব্যাংকে যে অ্যাকাউন্ট তার রয়েছে সেটি যৌথ অ্যাকাউন্ট বলে জানিয়েছেন তিনি।
যৌথ হিসাবধারীদের সঙ্গে ডিড অব অ্যাগ্রিমেন্ট থাকার কারণে ওই অ্যাকাউন্টে অন্যদের কী পরিমাণ অর্থ রয়েছে এবং ওই অ্যাকাউন্টের অংশীদার কতজন সে বিষয়ে উল্লেখ করা যাবে না বলেও দুদককে জানিয়েছেন মুসা। এ কারণে সুইস ব্যাংকে কেবল তার টাকার অংশের হিসাব দুদকের কাছে জমা দিয়েছেন মুসা বিন শমসের।