আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশে ৬০ বছরের এক নারী দশ মাসে পাঁচবার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। আরেক নারী চারমাসে তিন বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। আজগুবি শোনালেও বিষয়টি সত্যি। তবে এসব ঘটনা সৃষ্টি করেছেন প্রদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।
অপুষ্টিজনিত কারণে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে সরকারের বেশ কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে শিশু জম্ম দেয়ার পরপর মায়েরা যাতে ভালো খাবার খেতে পারে সেজন্য তাদের এক হাজার চারশ রুপি করে দেয়া হয়। বরাদ্দের এই অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে উত্তর প্রদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
এসব কর্মকর্তা ভূয়া তথ্যের মাধ্যমে গ্রামের সরল নারীদের কাগজে-কলমে অন্তঃসত্ত্বা দেখিয়ে জনপ্রতি ১৪শ রুপি উত্তোলন করে নিয়েছে। পরে ওইসব নারীদের অল্পকিছু অর্থ দিয়ে পুরো টাকাই নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছেন কর্মকর্তারা। কেবল বাউন্দি জেলার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই এমন ২শ ঘটনার খোঁজ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাঁচ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাজ্যের বাদাউন জেলার বাসিন্দা আশা দেবীকে কর্মকর্তারা চার মাসে তিনবার অন্তঃসত্ত্বা দেখিয়েছেন। ব্যাংকে আশা দেবী তিন বার অনুদানের চেক জমা দিতে দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে কর্মকর্তাদের বিষয়টি সন্দেহ হয়। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে বিষয়টি জানালে থলের বেড়াল বেরিয়ে আসে। বারাহি গ্রামের রাজেশ্বরী দেবী গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্তান জম্ম দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। পরের মাসেই তিনি অনুদানের ১৪শ রুপি উত্তোলন করে নিয়েছেন। তবে তদন্তে দেখা গেছে, রাজেশ্বরী সর্বশেষ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ১২ বছর আগে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. সুবোধ শর্মা বলেন, আমি পাবলিক ও কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাগজপত্রগুলি দেখেছি এবং এখন ব্যাংক প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি। এটি পাওয়ার পরই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হবে।
একজন নারীকে সরকারি প্রকল্পের আওতায় ১৪শ রুপি দেয়া হয় যাতে তিনি সরকারি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়ার পর পুষ্টিকর খাদ্য খেতে পারেন। এটি তার ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী হিসেবে কাজ করবে। তবে দুঃখজনক হলো, প্রকল্পটির অপব্যবহার করা হয়েছে।