শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: বিয়ের পর ৪৭ বছরের অপেক্ষা একটি সন্তানের জন্য। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা মুখ তুলে তাকান নি। অবশেষে কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রথম সন্তান জন্ম দিয়ে ভীষণ খুশি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসরের দম্পতি মহিন্দর সিং গিল (৭৯) ও দলজিন্দার কাউর (৭২)। সত্তর বছর পেরিয়ে এখন তারা সন্তানের পিতামাতা হওয়ায় আনন্দ যেন আর ধরছে না।
গত ১৯শে এপ্রিল দলজিন্দার কাউর একটি সুস্থ ছেলে সন্তান জন্ম দেন। তার নাম রাখা হয়েছে আরমান সিং। বিবাহিত জীবনের ৪৭ বছর পর সন্তানের জন্ম দিতে পেরে কৃষক মহিন্দর সিং গিলের যেন চাঁদ হাতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, এক পর্যায়ে তো আমি হতাশ হয়েই পড়েছিলাম। মনে করেছিলাম আমি বুঝি আর কোনদিন সন্তানের পিতা হতে পারবো না। কিন্তু মন মানছিল না। আবার আমরা ভাবলাম একবার শেষ চেষ্টা করেই দেখি না, আর একবার। এমনটা ভেবেই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান অমৃতসর থেকে হরিয়ানা রাজ্যে ন্যাশনাল ফার্টিলিটি অ্যান্ড টেস্টটিউব বেবি সেন্টারে।
২০১৩ সাল থেকে সেখানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে সন্তান ধারণের (আইভিএফ) চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু প্রথমে বেশ ঝক্কিতে পড়তে হয় তাদের। কারণ, তাদের দু’জনেরই বয়স সত্তর বছর পেরিয়ে গেছে। দলজিন্দার কাউরের শরীর ভেঙে গেছে। এই বয়সে একটি সন্তান গর্ভে ধারণের যে ঝুঁকি তা তিনি বহন করতে সামথ্য রাখেন কিনা- ইত্যকার বিষয় নিয়ে চলে পরীক্ষা। শুরু হয় মেডিকেল পরীক্ষা। ওই সেন্টারটি পরিচালনা করেন অনুরাগ বিষ্ণু।
তিনি বলেন, প্রথমে তো আমরা তাদেরকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। কারণ, দলজিন্দার কাউর ছিলেন ভীষণ দুর্বল। কিন্তু মেডিকেল রিপোর্টে দেখতে পাই তার কোন শারীরিক সমস্যা নেই। তিনি সন্তান ধারণ করতে পারবেন। এরপরই তার চিকিৎসা শুরু হয়। ফলে তার কোলজুড়ে এসেছে সন্তান। এই বয়সে সন্তানের মা হতে পেরে দলজিন্দার কাউর খুশিতে আত্মহারা।
তিনি বলেন, এখন আমি আনন্দে বাঁচতে পারবো। আমার জীবন পূর্ণ হয়েছে। উল্লেখ্য, ওই প্রজনন কেন্দ্রে এ পর্যন্ত যাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে এর আগে আরও এক নারী ৭০ বছর বয়সে সন্তান ধারণ করে জন্ম দিয়েছেন। দলজিন্দার কাউর সে হিসেবে দ্বিতীয়। এর আগে ২০০৬ সালে ৭০ বছর বয়সী রাজো দেবী জন্ম দিয়েছিলেন একটি কন্যা সন্তান। এর মধ্য দিয়ে তখন তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার রেকর্ড গড়েন।