মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০২:৪১

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বুধবার মুজাহিদের রায়

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বুধবার মুজাহিদের রায়

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শীর্ষবিন্দু নিউজ: একাত্তরে বাংলাদেশে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বুধবার। মঙ্গলবার এ আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

গত ৫ জুন বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় যে কোনো দিন মুজাহিদের মামলার রায় দেওয়ার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) বলে রেখে দিয়েছিলেন চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। মুজাহিদের এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল আসামি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সাক্ষ্য ও দালিলিক প্রমাণের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। এর পর মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর পূর্ণ বিবরণ দেন এই প্রসিকিউটর।

ট্রাইব্যুনালের ৬ষ্ঠ রায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গঠনের ৩ বছর প্রায় ৪ মাসে এসে ৬ষ্ঠ কোনো অভিযুক্তের মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে শেষ হওয়া অন্য ৫ জনের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল-১। একই ট্রাইব্যুনাল সোমবার ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে।

বাকি ৩ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন গত বছরের ২২ মার্চ গঠিত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ২১ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দিয়ে জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন ওই ট্রাইব্যুনাল। একই ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। আর গত ৯ মে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়ে মামলার রায় ঘোষণা করেন একই ট্রাইব্যুনাল।

মামলার ধারাবাহিক কার্যক্রম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। গত বছরের ১৬ জানুয়ারি মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ১০৯ পৃষ্ঠার ৩৪টি বিভিন্ন ঘটনাসহ মোট ছয় হাজার ৬৮০ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুর ও ঢাকাসহ সারা দেশে সাধারণ মানুষকে হত্যা, গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় মুজাহিদের বিরুদ্ধে। ২৬ জানুয়ারি এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক মামলাটি দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন। গত বছরের ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৭টি অভিযোগে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল-২। ১৯ জুলাই মুজাহিদের বিরুদ্ধে ২৯ পৃষ্ঠার ওপেনিং স্টেটমেন্ট (সূচনা বক্তব্য) উত্থাপন করেন রাষ্ট্রেপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও মীর ইকবাল হোসেন। মুজাহিদের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তাদের মধ্যে ঘটনার সাক্ষীরা হলেন, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধকালে গেরিলা বাহিনীর সদস্য জহিরউদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল, সাংবাদিক মাহবুব কামাল, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর, মো. রুস্তম আলী মোল্লা, আব্দুল মালেক মিয়া, রঞ্জিত কুমার নাথ ওরফে বাবুনাথ, মোঃ আবু ইউসুফ পাখি, মীর লুৎফর রহমান, একেএম হাবিবুল হক মুন্নু, ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, চিত্তরঞ্জন সাহা ও শক্তি সাহা। আর জব্দ তালিকার সাক্ষীরা হলেন, বাংলা একাডেমীর সহকারী গ্রন্থাগারিক মো. এজাব উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রধান ডকুমেন্টশন কর্মকর্তা আমেনা খাতুন ও জাতীয় জাদুঘরের সংরক্ষক স্বপন কুমার। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।

অন্যদিকে গত ৫ মে মুজাহিদের পক্ষে একমাত্র সাক্ষী হিসেবে সাফাই সাক্ষ্য দেন তার ছোট ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর। ট্রাইব্যুনাল সাফাই সাক্ষীর সংখ্যা ৩ জন নির্ধারণ করে দিলেও আর কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেননি আসামিপক্ষ। গত ৬ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত এবং ৪ ও ৫ জুন মোট ৬ কার্যদিবস রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ ও প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল। আর ২২ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ৬ কার্যদিবসে মুজাহিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, আইনজীবী মুন্সী আহসান কবির ও অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান।

মুজাহিদের বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা, সাধারণ মানুষ হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দেশত্যাগে বাধ্য করা ইত্যাদি। মুজাহিদ একক ও দলবদ্ধভাবে সরাসরি জড়িত থেকে ও নেতৃত্ব দিয়ে কিংবা সহযোগিতা ও নির্দেশ দানের মাধ্যমে এসব ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর চামেলীবাগ থেকে ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন হোসেনকে অপহরণ করা হয়। মুজাহিদের পরিচালনাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন ৭/৮ জন যুবক তাকে ধরে মিনিবাসে তুলে নেয়। আজ পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এ) (জি) এবং ৪ (১), ৪ (২) ধারায় বর্ণিত অপরাধ করেছেন মুজাহিদ। ওই আইনের ২০ ধারায়ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেছেন তিনি। ওই সময় শহীদ সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ছিলেন। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নিজ পত্রিকায় ভাষ্যকার পরিচয়ে ‘ঠগ বাছিতে গা উজাড়’ শিরোনামে এক প্রবন্ধ লিখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এদেশীয় এজেন্টদের বাংলাদেশের নিরীহ নিরস্ত্র মানুষের ওপর হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন। ওই প্রবন্ধ প্রকাশের পর জামায়াতের দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখে ‘অতএব ঠক বাছিও না’ শিরোনামে পাল্টা প্রবন্ধ ছাপা হয়। ওই প্রবন্ধে সিরাজ উদ্দিন হোসেনকে ‘ভারতের দালাল’ হিসেবে সমালোচনা করা হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৩টার সময় সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনের ৫ নম্বর চামেলীবাগের ভাড়া করা বাসায় ৭/৮ জন রাইফেলধারী যুবক ঢুকে পড়ে। তাকে তারা নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এমনকি তার লাশেরও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ-২ এ বলা হয়েছে, একাত্তরের মে মাসে একদিন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নেতৃত্বে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন থানায় বিভিন্ন গ্রামে হিন্দুদের প্রায় তিন শ’ থেকে সাড়ে তিন শ’ বাড়ি পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা। পরে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন হিন্দু নরনারীকে হত্যা করে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এ) (সি) (জি) এবং ৪ (১) ধারায় অপরাধ সংঘটিত করেছেন তিনি।

অভিযোগ-৩ এ বলা হয়েছে, একাত্তরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে যে কোনো একদিন ফরিদপুর শহরের খাবাসপুর মসজিদের সামনে থেকে রাজাকাররা ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার গোয়ালচামট (রথখোলার) মৃত রমেশ চন্দ্র নাথের পুত্র রণজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটক করে। বেলা অনুমান ১১টার দিকে ফরিদপুর পুরোনো সার্কিট হাউসে আসামি আলী আহসান মুজাহিদের সামনে পাকিস্তানি সেনা অফিসার মেজর আকরাম কোরাইশীর কাছে হাজির করা হয় বাবু নাথকে।
তখন মুজাহিদ ওই মেজরের সঙ্গে কথা বলার পর বাবু নাথের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তার একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হয়। নির্যাতনের পর মুজাহিদের ইশারায় তাকে হত্যা করার উদ্দেশে বিহারি ক্যাম্পের উত্তর পাশে আব্দুর রশিদের বাড়িতে নিয়ে রাজাকাররা আটকে রাখে। পরে রাতে রণজিৎ নাথ বাবু তার আটক ঘরের জানালার শিক বাঁকা করে ওই ঘর থেকে পালিয়ে জীবন বাঁচান।

অভিযোগ-৪ এ বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ জুলাই সকাল বেলায় ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থেকে স্থানীয় রাজাকাররা মোঃ আবু ইউসুফ ওরফে পাখি, পিতা- মৃত মোঃ জয়নাল আবেদীন, গ্রাম-পূর্ব গোয়ালচামট খোদাবক্সপুর, থানা- কোতোয়ালি, জেলা- ফরিদপুরকে মুক্তিযোদ্ধা সন্দেহে আটক করা হয়। এরপর পাখিকে ফরিদপুর স্টেডিয়ামে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে আটক করা হয়। আটক বন্দিদের মধ্যে আবু ইউসুফ পাখিকে দেখে মুজাহিদ সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি মেজরকে কিছু একটা বলার পরই তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। সেখানে ১ মাস ৩ দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে যশোর ক্যান্টনমেন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নির্যাতনের ফলে আবু ইউসুফ পাখির বুকের ও পিঠের হাড় ভেঙ্গে যায়।

অভিযোগ-৫ এ বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট রাত ৮টায় পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি আসামি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি মতিউর রহমান নিজামীসহ ঢাকার নাখালপাড়ার পুরনো এমপি হোস্টেলের আর্মি ক্যাম্পে যান। সেখানে তারা আটক সুরকার আলতাফ মাহমুদ, জহির উদ্দিন জালাল, বদি, রুমি, জুয়েল ও আজাদকে দেখে তাদের গালিগালাজ করেন এবং পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনকে বলেন যে, প্রেসিডেন্টের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আদেশের আগেই তাদের হত্যা করতে হবে। আসামি মুজাহিদ অন্যদের সহায়তায় আটকদের একজনকে ছাড়া অন্যান্য নিরীহ-নিরস্ত্র বন্দিদের অমানুষিক নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ গুমের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন।

অভিযোগ-৬ এ বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৭ মার্চের পর ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প তৈরি করে। পরবর্তীতে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তারাও ওই স্থানে ক্যাম্প করে প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ অপরাধজনক নানা কর্যক্রম চালায়। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি হবার সুবাদে আর্মি ক্যাম্পে গিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ছাত্রসংঘের ও আলবদর বাহিনীর সুপিরিয়র নেতা হিসেবে আর্মি ক্যাম্পে উপস্থিত ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করতেন। এ ধরনের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র মাধ্যমে আসামী আলী আহসান মোহামদ মুজাহিদ ১০ ডিসেম্বর থেকে পরিচালিত বুদ্ধিজীবী নিধন অভিযানেরসহ সারা বাংলাদেশের দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনীসহ হত্যা, নির্যাতন, বিতাড়ন ইত্যাদিসহ যাবতীয় মানবতবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা সংঘটিত করেন।

অভিযোগ-৭ এ বলা হয়েছে, একাত্তরের ১৩ মে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকার বাহিনী ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে। শান্তি কমিটির বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বকচর গ্রামের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় হামালা চালিয়ে বীরেন্দ্র সাহা, উপেন সাহা, জগবন্ধু মিস্ত্রি, সত্য রঞ্জন দাশ, নিরদবন্ধু মিত্র, প্রফুল্ল মিত্র, উপেন সাহাকে আটক করা হয়। উপেন সাহার স্ত্রী রাজাকারদের স্বর্ণ ও টাকা দিয়ে তার স্বামীর মুক্তি চান। রাজাকাররা সুনীল কুমার সাহার কন্যা ঝুমা রানীকে ধর্ষণ করে। পরে আটক হিন্দু নাগরিকদের হত্যা করে। তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অনিল সাহাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়।

 

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025