
শীর্ষবিন্দু নিউজ: গত কয়েকদিন থেকে আলোচনায় চলে আসা সরকার দলীয় সাংসদ গোলাম মাওলা রনি গ্রেপ্তার হয়েছেন্। সাংবাদিক পেটানোর মামলায় জামিন বাতিলের দুই ঘণ্টার মাথায় সংসদ সদস্য রনিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বুধবার বিকালে বাড্ডা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে বেলা দেড়টার দিকে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউনুস আলীর আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান আসামি রনিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। বুধবার রনির অনুপস্থিতিতেই হাকিম আদালতে জামিন বাতিলের আবেদনের শুনানি হয়। অন্যদিকে বাদীপক্ষে আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন আসামির জামিন বাতিলের আবেদনের পক্ষে যুক্তি দেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা শুনানির পর আদালত সাংসদ রনির জামিন বাতিল করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বলেন, যখন আইন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, দলও তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দোষী সাব্যস্ত হলে রনির নিজেরই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করেন আশরাফ। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তাকে (রনি) আদালতে হাজির করা হবে। আইন সবচেয়ে বড় জিনিস। কেউ যদি অন্যায় করে তাকে উপযুক্ত আইনের মাধ্যমেই নেয়া হবে। দোষী ব্যক্তির রাজনীতিতে থাকা সমীচীন না বলেন তিনি।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহের জন্য শনিবার পল্টনে রনির কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ইমতিয়াজ মমিন সনি ও ক্যামেরাম্যান মহসিন মুকুল। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সংসদ সদস্য রনি নিজেই প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর চড়াও হয়ে লাথি মারছেন। ঘটনার পর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ রনিকে আসামি করে একটি মামলা করে।
এরপর রনি পাল্টা মামলা করেন, যাতে দুই সংবাদিকসহ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অন্যতম মালিক ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকেও আসামি করা হয়। ইনডিপেনডেন্টের করা মামলায় রনি রোববার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। এরপর মামলার বাদি ইউনুস আলী তাকে টেলিফোনে হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে রনির বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করেন এবং জামিন বাতিল চেয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করেন।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গোলাম মাওলা রনি। তবে অল্প দিনের ভেতরেই তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার খবর আসে গণমাধ্যমে। আয়কর বিবরণীতে সম্পদের তথ্যে গড়মিল পেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর আগেও সাংবাদিকদের নিগৃহীত করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রনি পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের বললেও পরে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে বলেন, দল চাইলে তবেই তিনি পদত্যাগ করবেন।
Leave a Reply