শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:০০

রোবট মানুষ আসছে ২০২৯ সালেই

রোবট মানুষ আসছে ২০২৯ সালেই

 

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রযুক্তি আকাশ ডেস্ক: ২০২৯ সালের মধ্যেই মানুষের বৃদ্ধিবৃত্তির পর্যায়ে চলে আসবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্র। এসময়ের মধ্যে রোবট বা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রগুলো মানুষের মতো চিন্তা করতে পারবে, ভালো-মন্দের সিদ্ধান্ত নিতেও সক্ষম হবে। মার্কিন প্রকৌশলী ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষক রে কার্জউইল সম্প্রতি এ আশা ব্যক্ত করেছেন। এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

রে কার্জউইল জানিয়েছেন, ২০৩০ সাল নাগাদ প্রযুক্তি এতোটাই অগ্রসর হবে যে, মানুষ শরীরের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে আয়ু বাড়িয়ে নিতে পারবে। শরীরের ভেতর ন্যানো রোবট বসিয়ে কোনো স্থান আক্রান্ত হলে তা সারিয়ে তোলাও সম্ভব হবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে গবেষণার অগ্রগতি সম্পর্কে রে কার্জউইল জানিয়েছেন, বর্তমানে কৃত্রিম গবেষণায় উন্নয়ন দ্রুত এগিয়ে চলছে। আইবিএমের তৈরি ওয়াটসন কম্পিউটার এখন ধাঁধা গেম খেলতে পারে। এছাড়াও তৈরি হয়েছে স্বয়ংক্রিয় বা চালকবিহীন গাড়ি। এখন মুঠোফোনেও চলে এসেছে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার ব্যবহার। মুঠোফোনে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় কারণ মুঠোফোনে সিরি বা গুগল নাউ-এর মত সফটওয়্যার যুক্ত হয়েছে। কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার মডেল ব্যবহার করে এখন বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব।

গুগলে কর্মরত ৬৫ বছর বয়সী রে কার্জউইলের সাক্ষাত্কার প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। সাক্ষাত্কারে রে কার্জউইল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে, এমন কম্পিউটার ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তার কাজে লাগানো যায়। মানুষের ক্ষেত্রে আবেগ শনাক্ত করাটা বুদ্ধিমত্তার একটি বড় বৈশিষ্ট্য। কৃত্রিম বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্রের মধ্যেও এ বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন যাতে মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমানরা। আবেগ বুঝতে পারলে এসব যন্ত্র ভাষা বুঝতে পারবে আর ভাষা বুঝতে পারলেই জ্ঞানে ঋদ্ধ হবে রোবট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যত্ সম্পর্কে রে কার্জউইল জানিয়েছেন, ২০৪৫ সাল নাগাদ মানুষের বৃদ্ধিমত্তাকে যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তা ছাড়িয়ে যাবে এমন ধারণা করা হলেও এ সময়ের আগেই তা অর্জন করা সম্ভব। ২০২৯ সালেই সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বুদ্ধির সম পর্যায়ে চলে আসবে এবং ‘টিউরিং টেস্ট’ পাশ করে যাবে। টিউরিং টেস্ট হচ্ছে, বিজ্ঞানী অ্যালান টিউরিং প্রবর্তিত মানবিক বুদ্ধিমত্তা এবং কম্পিউটারের বুদ্ধিমত্তার পার্থক্য করার একটি পদ্ধতি। মানুষ-এর বুদ্ধিমত্তা আর কম্পিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পার্থক্য করতেই টিউরিং টেস্ট করা হয়। টিউরিং টেস্ট চালু হবার পরেই এ টেস্ট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। যে, প্রশ্নটি বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে আর তা হচ্ছে মানুষের মতো বুদ্ধিমান  কম্পিউটার কী আদৌ তৈরি করা সম্ভব? আর যদি তা হয়ও, তবে কম্পিউটারের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে? এ প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।

গবেষক কার্জউইল আশা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে বসে গুগল বা ফেসবুক তৈরি হয়েছে। এখন আফ্রিকার একটি শিশু ১৫ বছর আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়েও বেশি তথ্য জানতে পারে। তাই, প্রযুক্তিকে সব সময় দ্বিমুখী তলোয়ার বলা যেতে পারে যার ভালো-মন্দ দুটো দিকই রয়েছে; তবে ভালোর দিকটাই বেশি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মানুষের দীর্ঘায়ু দেখার প্রত্যাশা করছেন মার্কিন এই গবেষক।

গবেষক রে কার্জউইল জানান, বর্তমানে ক্লাউড প্রযুক্তির মত প্রযুক্তিতে বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে তথ্য বিনিময় করা সহজ হয়েছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষের মস্তিষ্ক থেকে সরাসরি যন্ত্রে তথ্য স্থানান্তর করা যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমানরা কী মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে বা মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে? এ প্রশ্নের জবাবে এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা  বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, আমরা আধুনিক প্রযুক্তির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথা বলছি। মঙ্গল গ্রহ থেকে কৃত্রিম কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এসে আমাদের আক্রমণ করবে তা নিয়ে ভাবছি না। এ বিষয়ে ভাবনার চেয়ে আমরা ভাবছি আমাদের নিজেদের তৈরি কৃত্রিম যন্ত্রগুলো নিয়ে, যা পুরোটাই প্রযুক্তির উন্নয়ন। আমাদের হাতে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমানরা কখনও আমাদের বিপক্ষে যাবে না। বর্তমানে যন্ত্র যেমন আমাদের বুদ্ধিমত্তাকে বাড়িয়ে তুলছে ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতা করবে যন্ত্র।

 

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024