নিউজ ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভবন ও সেতু নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এবার রেললাইনের স্লিপারে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেলরুটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মনু রেলসেতুতে রেললাইনের নষ্ট স্লিপারের ওপরে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, কাঠের স্লিপারগুলো না পাল্টিয়ে তার বদলে বাঁশ ব্যবহারের কারণে তা স্থানচ্যুত হয়ে রেললাইন সরে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মনু নদের ওপর প্রায় ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুতে ২০৮টি স্লিপার রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক স্লিপারই নষ্ট। তাই স্থানচ্যুতি ঠেকাতে স্লিপারের মাঝে ফালি করা বাঁশ লাগিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনজন কীম্যান (রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী) সেতুর ওপরে নাট-বল্টু লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ স্লিপারের সঙ্গে নিচের গার্ডারের সংযোগ দেয়ার কাজ করছেন।
কীম্যান আব্দুর রহমান জানান, স্লিপারগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাকুনিতে নাটবল্টু খুলে স্লিপারগুলো সরে যায়। দিনে ২-৩ বার এসে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে হয়। কোথাও ত্রুটি থাকলে সারাতে হয়। এ অবস্থায় ট্রেন চলাচলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এই রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরাও।
হবিগঞ্জের লস্করপুর থেকে কুলাউড়ার টিলাগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত এলাকার দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আজম বলেন, ‘মনু রেলসেতুটি নিয়ে আমরা চিন্তিত। সেজন্য ওই এলাকায় একজন কি-ম্যান (রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী) সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকেন।’
রেলওয়ের সিলেট কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান বলেন, কাঠের সংকটের কারণে মনু সেতুতে নতুন স্লিপার স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যেই সেখানে পুরোনো স্লিপার বদলে নতুন স্লিপার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই বলে তিনি দাবি করেন।