শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে বৃটেনে তোলপাড় চলছে। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই প্রথম বিদেশী অতিথি হিসেবে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে।
এ সময় তিনি রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে বৃটেন সফরের আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণ ও তিনি বৃটেন সফরে এলে পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে পার্লামেন্টও এখন দ্বিধাবিভক্ত। এরই মধ্যে ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বৃটেনে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ। তা থেকে বৃটেনে তার সফর বাতিল করারও দাবি তোলা হয়েছে।
এখন বৃটিশ পার্লামেন্টের হাউজ অব কমন্সেও তার বিরোধিতা করা হয়েছে। ট্রাম্প যদি বৃটেন সফরে আসেনই তাহলে তার পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার কথা।
কিন্তু তার বিরোধিতা করেছেন হাউজ অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ। তাকে সমর্থন দিয়েছেন বেশ কিছু এমপি। স্পিকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন পার্লামেন্ট বর্ণবাদ ও যৌনতার বিরোধী বৃটিশ পার্লামেন্ট। তাই পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানাবেন না।
উল্লেখ্য যে, এর মধ্য দিয়ে তিনি সরাসরি না হলেও ট্রাম্পকে বর্ণবাদ ও যৌনতামুগ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন। জন বারকাউ বলেছেন, অভিবাসীদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে আমি ওয়েস্টমিনস্টার হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য রাখার বিষয়টিতে কঠোরভাবে বিরোধিতা করবো। তার এ মন্তব্য নিয়েও আবার নানা কথা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, একজন স্পিকার হবেন পক্ষপাতহীন।
কিন্তু জন বারকাউয়ের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত। উল্টো আবার জন বারকাউকে সমর্থন করেছেন বেশ কিছু এমপি। তার মধ্যে রয়েছেন বিরোধী লেবার দলের জেরেমি করবিন। তিনি টুইটে বলেছেন, ভাল বলেছেন জন বারকাউ। আমাদের দেশের মূল্যবোধের পক্ষে অবশ্যই আমাদের দাঁড়াতে হবে। ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফর এগিয়ে যাওয়া উচিত হবে না।
লেবার দলের সাবেক উপপ্রধান নেতা হ্যারিয়েট হারম্যান বলেছেন, হাউজ অব কমন্সের জন্য এটা একটি গর্বের মুহূর্ত। এখানে বর্ণবাদ ও যৌনতাকে স্বাগত জানানো হয় না। লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের টুটিং আসনে নির্বাচিত হয়েছেন রোজিনা আলিন-খান।
তিনি স্পিকার জন বারকাউয়ের উদ্যোগকে বলিষ্ঠ ও সাহসী বলে আখ্যায়িত করেছেন। ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এমপি সারাহ ওয়ালাস্টোন বলেছেন, বারকাউ যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা যথার্থ।
কারণ, ট্রাম্প নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। জন বারকাউকে সমর্থন করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেট দলের নেতা টিম ফ্যারন।
তিনি বলেছেন, স্পিকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা ওভাল অফিসে বসে থাকা এই লোকটিকে আমাদের মাঝে বক্তব্য রাখতে দিতে পারি না। আমরা তাকে স্বাগত জানাই না। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট দলের এমপি তাসমিনা শেখ বলেছেন, বহুল কাঙ্খিত নেতৃত্ব দিয়েছেন জন বারকাউ।
এক্ষেত্রে বৃটিশ সরকারের ঘাতটি আছে। স্পিকারের বক্তব্যের জবাবে বর্ষীয়ান এমপি ডেনিস স্কিনার বলেছেন, আমি দুটি শব্দ বলবো। তা হলো ওয়েল ডান। অর্থাৎ যথার্থই করেছেন। তবে স্পিকারের বিরোধিতা করেছেন ইউকিপের সাবেক নেতা নাইজেল ফারাজে।
তিনি বলেছেন, স্পিকার বারকাউয়ের উচিত আমাদের পার্লামেন্টের চমৎকার রীতির পক্ষে অবস্থান নেয়া। তার উচিত নিরপেক্ষ থাকা।