শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৩

কূটনৈতিক চাপকে পাত্তা দিচ্ছে না আ.লীগ

কূটনৈতিক চাপকে পাত্তা দিচ্ছে না আ.লীগ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আব্দুর রশিদ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক দেশ সরকারকে আলোচনা শুরুর তাগিদ দিচ্ছে। তবে এ নিয়ে চিন্তিত নন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা। এ বিষয়ে দলটির নেতারা জানিয়েছেন, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসবে। সেখানেই আলোচনা হবে। নতুন করে আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেবে না দলটি।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলেছে, গত ৪ মে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া আলটিমেটামের মাধ্যমে আলোচনার পরিবেশ নষ্ট করায় আওয়ামী লীগ আর উদ্যোগ নেবে না। তবে বিরোধী দলের যদি কোনো প্রস্তাব থাকে, তাহলে তারা সেটা সংসদে এসে পেশ করতে পারে। পরে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ‘নির্বাচন-পদ্ধতি’ ঠিক করা যেতে পারে। সংসদের বাইরে অন্য কোথাও কোনো ধরনের আলোচনা করবে না আওয়ামী লীগ।

আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘সংবিধানে যেভাবে নির্বাচনের কথা বলা আছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে। তাই নতুন করে আলোচনার কিছু নেই।  তবে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে নির্বাচন-পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলকেই প্রস্তাব দিতে হবে।’

আওয়ামী লীগের নেতাদের ধারণা, বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করে কিছুই করতে পারবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না এলে বিএনপি ভয়াবহ রাজনৈতিক ভুল করবে। এ জন্য তাদের নির্বাচনে আসতেই হবে। দলটির নেতারা বলেছেন, জাতিসংঘ ও কূটনীতিকেরা নানা ধরনের চাপ দেবেন। কিন্তু সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো চাপের কাছে আওয়ামী লীগ নতি স্বীকার করবে না।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘আলোচনার দরজা সব সময় খোলা। তবে সে ক্ষেত্রে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে তাদের যোগ দিয়ে আলোচনার একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেখানেই নির্বাচন-পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্য কোথাও আলোচনা হবে না।’

জাতিসংঘের মহাসচিবসহ কূটনীতিকদের বারবার সংলাপের আহ্বানে আওয়ামী লীগ কোনো চাপ অনুভব করছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘না, আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। তবে এটা অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

সংলাপে আসেনি সমাধান ১৯৯৪-৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করছিল। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৯৪ সালে কমনওয়েলথ মহাসচিব এনিয়াওকু এমেকা সংকট নিরসনে দুই নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। তিনি খুব একটা আশার আলো দেখতে না পেয়ে পাঠালেন তাঁরই বিশেষ দূত স্যার নিনিয়ানকে। অনেক চেষ্টার পর সমস্যা সমাধানে একটি ফর্মুলা তৈরি করেন নিনিয়ান। তিনি ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি মন্ত্রিসভার প্রস্তাব করেছিলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীসহ পাঁচজন থাকবেন ক্ষমতাসীন দলের ও পাঁচজন বিরোধী দলের। কিন্তু সেই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেছিল সে সময়ের বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান নিনিয়ান।

আবার ২০০৬ সালে তত্কালীন বিএনপির সরকারের আমলে আবদুল জলিল ও মান্নান ভূঁইয়ার সংলাপ হয়। শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

সংলাপের কার্যকারিতার বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘একতরফা উদ্যোগ নেওয়ার ফলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগে যতগুলো সংলাপ হয়েছে, সেগুলো কাজে আসেনি। তবে এর বিকল্প নেই। সংলাপ না হলে সংঘাত অনিবার্য।’

কূটনীতিকদের উদ্যোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান বলেন, ‘আমি মনে করি, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনীতিকদের প্রকাশ্যে মতামত ব্যক্ত না করাই ভালো। কারণ, তাঁরা অনেকে প্রকৃত অবস্থা না জেনে মন্তব্য করেন। তবু আমরা “গ্লোবাল ভিলেজে” বাস করি বলে তাঁরা মতামত দিতে পারেন। তবে আমরা কূটনীতিকদের চাপ অনুভব করছি না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।’




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024