হাওয়াইয়ের এক নারীর বংশের পদবী এতোটাই দীর্ঘ যে তাকে এজন্য রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয়েছে। অবশ্য, শেষ পর্যন্ত তিনিই সেই যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। দীর্ঘ ৩৫ অক্ষরের নামটা উচ্চারণ করতে গিয়ে যে কোন বানান ও উচ্চারণ পণ্ডিতও রণে ভঙ্গ দেবেন। মার্কিন বংশোদ্ভূত হলেও পরে স্থায়ীভাবে থেকে গেছেন হাওয়াইয়ে। তার নামটা লেখার একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস চালানো হলো এখানে। ওই নারীর ডাকনাম জ্যানিস।
হাওয়াইয়ান ঐতিহ্য মেনে বিয়ের পর রাখা পুরো নামটি হচ্ছে: জ্যানিস কেইহানাইকুকাউয়াকাহিহুলিহীকাহাউনায়েলে (Keihanaikukauakahihuliheekahaunaele)। স্বামীর কাছ থেকেই বংশগত নামটি পেয়েছিলেন জ্যানিস। তিনি আগেই মারা গেছেন। তা সত্ত্বেও জ্যানিস সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কখনও এ নামটিকে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যবহার করবেন না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
জ্যানিস বলেন, পলিসিয়ান যে সংস্কৃতিতে আমার বিয়ে হয়েছে, সেটাকে আমি ভালোবাসি। আমি আমার হাওয়াইয়ান নামকে ভালোবাসি। তিনি বলেন, নামটা বহন করা বেশ সম্মানের। বছরের পর বছর ভিন্ন ধরনের দুটি পরিচয় ব্যবহার করতে হয়েছে তাকে। তার ড্রাইভিং লাইসেন্সে নাম লেখার জন্য সর্বোচ্চ ৩৪ অক্ষর পর্যন্ত জায়গা রয়েছে। আর হাওয়াইয়ের জাতীয় পরিচয় পত্রে অতীতে ৩৫ অক্ষরের নাম লেখার স্থান নির্ধারিত ছিল।
কিন্তু, গত মে মাসে জাতীয় পরিচয়পত্রে যখন নতুন করে নামকরণের প্রয়োজন হয়, বিপত্তির শুরুটা হয় সেখানে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো এক অক্ষর কম। তার ওপর প্রদত্ত প্রথম নামটি লেখার কোন স্থান নির্ধারিত ছিল না সেখানে। এক ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি থামিয়ে তার লাইসেন্সটি দেখছিলেন। সেখানেও প্রথম নাম লেখার জায়গা ছিল না।
তিনি ওই ট্রাফিককে বলেছিলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ত্রুটি আমার কোন ভুল নয়। আমি এটা ঠিক করার চেষ্টা করছি। কুমারী থাকার সময় অর্থাৎ বিয়ের আগে তার যে নামটি ছিল, সেটাই ব্যবহারের পরামর্শ দেন ওই ট্রাফিক। কিন্তু, এতে কষ্ট পান জ্যানিস। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি ওয়াল স্ট্রিটেই কাজ করতেন। হাওয়াইয়ের সংস্কৃতিকে একেবারে আপন করে নেয়ায় তিনি সেটা মানতে পারেননি।
হাওয়াইয়ের পরিবহন বিভাগের ওপর চাপ প্রয়োগে তার সমস্যাটি একটি স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারের ব্যবস্থা করেন জ্যানিস। কর্তৃপক্ষ তাকে বলেছিল নাম পরিবর্তনে ২ বছর সময় লাগবে। কিন্তু, টেলিভিশন চ্যানেলের সহযোগিতায় ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বছরের শেষ দিকে নামের জায়গায় ৪০ অক্ষর লেখার স্থান নির্ধারিত রেখে কার্ড তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।