শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: ব্রিটেনে কাজ করা বাংলাদেশীরা অন্যান্য ব্রিটিশদের থেকে কম মজুরি পান। মঙ্গলবার দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে সরকারি এক পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সেখানে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি আয় চীনা ও ভারতীয়দের। তবে বাংলাদেশিদের অবস্থান তলানিতে।
‘এথনিসিটি পে গ্যাপস ইন গ্রেট ব্রিটেন: ২০১৮’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয় শ্বেতাঙ্গ কর্মজীবীদের চেয়ে সংখ্যালঘুরা ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কম বেতন পান। আর বাংলাদেশি গোষ্ঠী ব্রিটিশ কর্মীদের থেকে ২০ দশমিক ২ শতাংশ কম উপার্জন করেন।
ভারতীয় ও চীনারা অন্যান্যদের চেয়ে কিছুটা ভালো আয় করলেও বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের সঙ্গে এই বৈষম্য অনেক বেশি ব্রিটিশদের। প্রথমবারের মতো প্রকাশিত এই প্রতিবেদন যুক্তরাজ্যে নীতিনির্ধারকদের ভবিষ্যতে বেতন বৈষম্য নিয়ে ভাবাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দফতরের সিনিয়র বিশ্লেষক হিউ স্টিকল্যান্ড বলেন, সবমিলে ভারতীয় ও চীনা কর্মীরা ব্রিটিশ কর্মীদের বিপরীতে ভালো আয় করেন। কিন্তু অন্যান্যদের আয় এমন না। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের সঙ্গে ব্রিটিশদের আয়ের ব্যবধান অনেক বেশি।তিনি বলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার সাপেক্ষে এই ব্যবধান কিছুটা হয়তো। তারপরও অনেক বেশি।
২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কর্মঘণ্টা হিসেব করে এই আয়ের তালিকা তৈরি করা হয়। সেখানে দেখা যায় চীনারা সবচেয়ে বেশি আেই করেন। ঘণ্টায় তাদের আয় প্রায় ১৫.৭৫ পাউন্ড। এরপরই ভারতীয়রা, তাদের আয় ১৩.৪৭ পাউন্ড।
তবে বাংলাদেশিদের আয় সবচেয়ে কম । ঘণ্টায় গড়ে ৯.৬ পাউন্ড আয় করেন তারা। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের আয় ১০ পাউন্ড। বেকারত্বের হারও সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই হার ৫৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
প্রতিবেদনে নারী-পুরুষ ভিত্তিতেও আয়ের তারতম্য তুলে ধরা হয়। ভারতীয় পুরুষদের আয় নারীদের চেয়ে ২৩.৩ শতাংশ বেশি। আর বাংলাদেশি মেয়েরা পুরুষের চেয়ে ১০.৫ শতাংশ বেশি আয় করে।
সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়, জন্মস্থানও এই আয়ের ওপর প্রভাব রাখে। যারা যুক্তরাজ্যে জন্ম নিয়েছে এবং যাদের জন্ম অন্য কোথাও তাদের আয়ের মধ্যেও পার্থক্য স্পষ্ট। পড়াশোনা, ইংরেজি বলার দক্ষতা এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশি, আফ্রিকান, ক্যারিবীয়, কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিটিশ, পাকিস্তানিদের সঙ্গে ব্রিটেনে জন্ম নেওয়াদের আয়ের পার্থক্য সবচেয়ে বেশি। যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশিরা ব্রিটিশদের চেয়ে ৯ শতাংশ কম আয় করেন। কিন্তু যুক্তরাজ্যে জন্ম না নেওয়া বাংলাদেশিদের সঙ্গে এই পার্থক্য ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ।