রোগা-পাতলা গড়নের এক মহিলা। পরনে স্থানীয় পোশাক। বুকের কাছে আঁকড়ে ধরে আছেন ছোট্ট একটি হরিণছানা। পরম মমতায় স্তন্য পান করাচ্ছেন তাকে।
চোখবুজে হরিণটিও রয়েছে বেশ আরামে। মাতৃস্নেহ যে সব জায়গাতেই এক, তা আবারও প্রমাণ করলেন ভারতের রাজস্থানের যোধপুরের বিশনোই সম্প্রদায়ের এই মহিলা। পিটিআই।
আইএফএস (ইন্ডিয়ান ফরেনে সার্ভিস) অফিসার প্রবীণ কাসওয়ান সম্প্রতি এ ছবি শেয়ার করেছেন নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে। লিখেছেন, এসব পশুরা বিশনোই সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে সন্তানসম।
নিজের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে এদের কোনো পার্থক্য করেন না তারা। সেই সম্প্রদায়েরই এক মহিলা পরম মমতায় স্তন্য পান করাচ্ছেন একটি হরিণ শাবককে।
এরা সেই সম্প্রদায়, যারা খেজুর গাছ বাঁচাতে ১৭৩০ সালে রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করে বলিদান দিয়েছিলেন ৩৬৩টি তাজা প্রাণ।
নেট দুনিয়ায় এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই এসেছে হাজার হাজার লাইক এবং কমেন্ট। সবাই বলছেন, একজন আদর্শ মায়ের মতোই কাজ করেছেন এই মহিলা। অনেকেই বলছেন, গ্রামের মানুষ গৃহপালিত পশুদের পরম যত্ন করেন এ কথা জানা। তবে নিজের সন্তান ভেবে কোনো বন্যপ্রাণীকে স্তন্য পান করানোর ঘটনা নজিরবিহীন।
মহিলা ঈশ্বরসম। একজন আদর্শ মা-ও বটে। কেউ বলছেন, পৃথিবীতে এত হিংসা-হানাহানির মধ্যেও যে মানবতা বজায় আছে, এই দেহাতি মহিলা তা আবারও বুঝিয়ে দিলেন। চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিলেন সত্যিই পশুপ্রেম কাকে বলে। পশুপ্রেম সম্পর্কে বিশনোই সম্প্রদায়ের উদাহরণ আরও রয়েছে।
রাজস্থানের বিখ্যাত কৃষ্ণসার হরিণকে ঈশ্বর রূপে পুজো করেন এই সম্প্রদায়ের মানুষ। আর সেই হরিণকেই মেরে ফেলেছিলেন অভিনেতা সালমান খান। তার কড়া শাস্তির দাবিও তুলেছিলেন এ সম্প্রদায়ের মানুষই।