শীর্ষবিন্দু নিউজ: শেষ মুহূর্তের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে ১৭৮ বছর বয়সী বৃটিশ ভ্রমণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান থমাস কুক।
প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার জন্য শেষ সময়ের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর বৃটেনের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএ) বলেছে, ভ্রমণ বিষয়ক এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছে।
এটা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। এর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়েছেন কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ। তারা ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে গিয়েছেন। ফলে তাদেরকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। সাধারণত যুদ্ধকালীন সময়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু থমাস কুক বন্ধের পর এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রথমবারের মতো শান্তিপূর্ণ সময়ে দেশে ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৪০টি জাম্বো জেট বিমান অপারেশনে নামছে। থমাস কুক বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত ভ্রমণ বিষয়ক ব্রান্ডগুলোর অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠানটি ১৮৪১ সালে লেস্টারশায়ারে ক্যাবিনেট মেকার থমাস কুক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি ও দ্য সান।
থমাস কুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার ফ্যাঙ্কহাউজার। তিনি তার প্রতিষ্ঠান এভাবে ধসে যাওয়াকে বড় এক বেদনার বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ জন্য তিনি তার লাখ লাখ কাস্টমার ও হাজার হাজার কর্মচারীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
উল্লেখ্য, থমাস কুক বন্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ২২০০০ মানুষ কর্মহীন হয়ে যাবেন। এর মধ্যে শুধু বৃটেনেই রয়েছেন ৯০০০ মানুষ। বৃটিশ পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শেপস বলেছেন, এই কোম্পানিটির স্টাফ ও যারা অবকাশ যাপনে যান তাদের কাছে খুব খারাপ খবর। তিনি আটকে পড়া মানুষদের দেশে ফেরত আনার বিষয়টি ভাবতে অনুরোধ করেছেন থমাস কুকের প্রতি।
তবে তিনি আরো ঘোষণা দিয়েছেন, সরকার এবং সিএএ উভয়েই আটকে পড়া মানুষদেরকে বিনা ভাড়ায় দেশে ফিরিয়ে আনতে কয়েক ডজন বিমান ভাড়া করেছে। জরুরি এই অপারেশনের কোডনাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন ম্যাটারহর্ন’।
উদ্দেশ্য, থমাস কুকের মাধ্যমে যেসব বৃটিশ বিদেশে গিয়েছেন অবকাশে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনা। রোববার ফাঁকা বিমান এ উদ্দেশে আকাশে উড়েছে। এসব বিমান আজ সোমবার বৃটিশ পর্যটকদের বৃটেনে ফিরিয়ে আনবে বলে বলা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি তার ঋণদানকারীদের ২০ কোটি ডলার পরিশোধ করার জন্য শেষ সময় ছিল রোববার বৃটেনের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিট। কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। এ নিয়ে সমঝোতা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
আর এর পরিণামে বন্ধ হয়ে যায় থমাস কুক নামের প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির বিমানগুলো সব বৃটেনের ঘাঁটির দিকে ফিরছে। তারপর তা আর উড়বে না।