শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:২৬

করোনায় থমকে আছে ১৪.৭ বিলিয়ন পাউন্ডের বিয়ে শিল্প

করোনায় থমকে আছে ১৪.৭ বিলিয়ন পাউন্ডের বিয়ে শিল্প

/ ১৯৮
প্রকাশ কাল: শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১

শীর্ষবিন্দু নিউজ, লন্ডন: গত বছর ২০২০ সালে বিয়ে করতে পারেননি ১ লাখ ৩২ হাজার ব্রিটিশ নারী পুরুষ। করোনাভাইরাসের পার্দুভাব আর লকডাউনের কারণে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখিন হোন। এমনটাই বলছিলেন ব্রিটিশরা। এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ অনলাইন দৈনিক ডেইলি মেইল।

ধারাবাহিকভাবে যে লকডাউন শিথিল হচ্ছে তাতে আগামী ২১ জুন বড় ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠানের কোনো সুযোগ এখনো দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনাভাইরাসের কবলে পড়েই বিয়ে করতে পারছেন না। তিনিও আগামী বছর জুলাই তার বান্ধবী সায়মন্ডসকে বিয়ে করবেন বলে মনস্থির করেছেন।

মানিমেইলের সম্পাদক ভিক্টোরিয়া বিশপ ১৮ মাস ধরে অপেক্ষা করছেন বিয়ের জন্যে। গত বছর সেপ্টেম্বর ফের চেষ্টা করেও ভিক্টোরিয়া সফল হননি। এরপর ফের চেষ্টা করেন কিন্তু ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের ভয়ে তা বিফলে যায়। জরিপ বলছে ভিক্টোরিয়ার মত আরো ১ লাখ ৩২ হাজার নারী-পুরুষ একইভাবে চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

ভিক্টোরিয়া বিশপ যারা বিয়ের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তাদের জন্যে শুভকামনা করে বলেন আমি ও আমার পার্টনার এখনো বিয়ের আশায় আছি, আশা রাখি তারাও একদিন বিয়ে করতে সফল হবেন। আমরা কোভিডের কারণে স্বাস্থ্যবিধি, লকডাউন নিয়ম এবং অতিথি সংখ্যার দারুণ সীমা দ্বারা স্তম্ভিত হয়ে আছি। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কারণে আমাকে বিয়ের অনুষ্ঠানে মাত্র ৩০ জন অতিথির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে ষষ্ঠবারের মত আমাকে বিয়ে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। আমি আসলে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ফিরতে যাচ্ছি।

ভিক্টোরিয়ার মতই আরেক নারী বলেন- আমি আর মানসিক চাপ নিতে পারছি না। চারবার আমি আমার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে বিয়ের উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু লকডাউন প্রত্যাহারের কোনো নমুনা দেখতে পাচ্ছি না। অনেকে বিয়ে করতে না পেরে বাড়ি পাল্টাতে পারছেন না, নতুন পারিবারিক জীবন শুরু করতে পারছি না। শুধু নতুন তারিখ পড়ছে, ফের তা পিছিয়ে যাচ্ছে। বিয়ে করতে যেয়ে যারা বেশ কিছু সঞ্চয় করেছিলেন তাদের অনেকে তা ভেঙ্গে ফেলেছেন। শেষ মুহূর্তে বিয়ের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানে পিয়ানো বাজান ৩৪ বছরের পিয়ানো বাদক জো আলেকজান্দ্রিয়া বলেন- কোভিড মহামারীতে কম করে হলেও ৩৫ হাজার পাউন্ড আয় হারিয়েছি। এসেক্সের বাসিন্দা দুই সন্তানের এই জননি বলেন- সরকারের কাছ থেকে আমরা বিন্দুমাত্র সবেদনা পর্যন্ত পাইনি। আয়ের কোনো উপায় দেখছি না। অনেক খাতে ব্রিটিশ সরকার সহায়তা দিলেও আমরা তা পাইনি। বিরাট এক অনিশ্চয়তা পেয়ে বসেছে আমাদের। পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানেও যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না। আমাদের অনেকে বছরে অন্তত ৮০টি বিয়েতে আমন্ত্রণ পেতাম। কেউ কেউ ৬ ফিগারের আয় বা লাখ পাউন্ড পর্যন্ত পকেটে ভরতে পারতাম। গত মার্চ থেকে কোনো বুকিং পাচ্ছি না। অনেককে বুকিংয়ের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।

লিবার্টি পার্ল ফটো এন্ড ফিল্ম কোম্পানির মালিক ৩৯ বছরের আম্বার তার বিয়ের দিন ক্ষণ তিনবার পিছিয়েছেন। কাউন্সিল অনুদান হিসেবে ১৩ হাজার পাউন্ড সহায়তা পেলেও তিনি মনে করেন খুব কঠিন সময় যাচ্ছে। গত মার্চের আগেই আম্বার বিয়ের পোশাক কিনেছেন। ভেনুর জন্যে নগদ পরিশোধ করেছেন। ফটোগ্রাফারকেও বুকিং দিয়ে রেখেছেন কিন্তু বিয়ের কোনো সুযোগ পাননি। তার মত মিলি ও ক্রিস ফ্রান্সে বিয়ের পরিকল্পনা করে তা কয়েক দফা পিছানোর কারণে ৪০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ক্ষতি গুনতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্রিটেনের অর্থনীতিতে প্রতি বছর বিয়ে খাত থেকে ১৪.৭ বিলিয়ন পাউন্ড যোগ হয়। এক জরিপে বলা হয় বিয়ে শিল্প থেকে ৫.৩ বিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতি গুণছে ক্যাটারস, ফুল, পোশাক নির্মাতারা। তবে নিজেই বিয়ের উদ্যোগ নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ধরনের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে অনেকের ধারণা।

তবে অধিকাংশ নারী-পুরুষ মনে করেন- বিয়ের অতিথি সংখ্যা স্বাভাবিকে ফিরে না আসা পর্যন্ত আগামী ২১ জুন যতই কোভিড লকডাউন থেকে মুক্তির জন্যে স্বাধীনতা দিবসের কথা বলা হোক তা কোনো কাজে আসবে না। বরং বরাবরের মত ফের আমাদের বিয়ের পরিকল্পনা মাঠে মারা যাবে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
All rights reserved © shirshobindu.com 2024