একটি ছোট্ট মেয়ে শিশুকে কাবুল বিমানবন্দরের দেয়ালের উপর দিয়ে ব্রিটিশ সৈন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। মূলত শিশুটিকে বাবা-মা ছাড়া একা আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যে পাঠাতে এমন করা হয়েছিলো। খবর রয়টার্সের।
এ বিষয়ে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালেসকে প্রশ্ন করা হলে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তাদের পক্ষে আফগানিস্তানের একা কোনো শিশুকে তাদের দেশে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। ব্রিটিশ মন্ত্রী ওয়ালেস স্কাই নিউজকে বলেছেন, আমরা ছোট্ট একটি শিশুকে এভাবে নিতে পারি না।
তিনি সাংবাদিককে বলেছেন, শিশুকে একা নিয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে তার বাবা-মাকেও পরে নিয়ে যেতে হবে। কাবুল বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যের সামরিক সদস্যদের আফগানদের দেশ ছাড়ার ঢল মোকাবেলা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাদের সেনার নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তান ইতোমধ্যেই ঐতিহ্যগতভাবে মূল্যবান বস্তুতে সমৃদ্ধ অঞ্চল। শুধু তাই নয়, সেখানে যে ধাতুগুলো মেলে তা একুশ শতকের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয়। নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, অবকাঠামোর অভাব এবং নিয়মিতো খরার কারণে এই খনিজ সম্পদের অপারেশন চালানো প্রায় অসম্ভব ছিলো। কিন্তু তালিবান নিয়ন্ত্রণে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে পারে। এখনও এসব খনিজে চীন, পাকিস্তান ও ভারতের মতো দেশ আগ্রহী।
মজার বিষয় হলো, তালেবানরা কয়েকবছর ধরেই এসব খনিজ অবৈধভাবে উত্তোলন করে ব্ল্যাক মার্কেটে বিক্রি করছে। আফিম এখন তালিবানদের আয়ের প্রধান উৎস এককভাবে নেই। ব্র্যাক মার্কেট থেকে তারা ভালো অর্থ পায়। মাত্র ৫ বছর আগেও তারা ছিলো পৃথিবীর ৬ষ্ঠ ধনী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। কিন্তু ফোর্বসের বর্তমান হিসেব বলছে, তাদের আয় ৪ গুণ বেড়ে এখন ১.৬ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি। কিন্তু ২০১০ সালে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও ভূতাত্ত্বিকরা জানান, দেশটিতে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের খনিজ সম্পদের মজুদ রয়েছে। যা পুরো দেশের অর্থনৈতিক ভাগ্যকে বদলে দিতে পারবে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে ভালো পরিমাণে লোহা, সোনা ও তামার মজুদ রয়েছে। দেশটিতে আছে বিপুল পরিমাণ রেয়ার আর্থ ম্যাটেরিয়াল। খুব সম্ভবত আফগানিস্তান পৃথিবীর বৃহত্তম লিথিয়ামের মজুদওয়ালা দেশ। বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স আর সেলুলার যুগে লিথিয়ামের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান আর নেই।
Leave a Reply