মৃত্যুদণ্ডের ভয় পাচ্ছেন আইএস বধূ খ্যাত শামীমা বেগম। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শিগগিরই বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে তাকে। শামীমার আশঙ্কা, বিচারের মুখোমুখি হলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।
যদিও সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার স্বশাসিত অঞ্চল রোজাভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। তারপরেও মৃত্যুদণ্ডের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন শামীমা। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়ার জন্য ব্রিটেন ছেড়েছিলেন শামীমা বেগম। সিরিয়ায় পৌঁছে বিয়ে করেছিলেন এক বিদেশী আইএস যোদ্ধাকে। তবে আইএস’র সর্বশেষ ঘাটি ধ্বংস হওয়ার পর বন্দী শিবিরে জায়গা মেলে শামীমার। তিনি তখন আবার ব্রিটেনে ফেরার চেষ্টা করেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল সম্প্রতি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সিরিয়ার একটি বন্দী শিবির থেকে রোববার শামীমা বলেন, তিনি কোনোভাবেই এই মৃত্যুদণ্ড মেনে নিতে পারবেন না। বর্তমানে ২২ বছর বয়স শামীমার।
তিনি জানান, তিনি এখন তার ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং নিজেকে শুধরে নিয়েছেন। শামীমা বলেন, আমি ফেরেশতার (এঞ্জেল) মতো মানুষ ছিলাম। আমার মা’কে জিজ্ঞেস করুন, আমি ছিলাম ফেরেশতা। কিন্তু বর্ণবাদের শিকার হওয়ায় আমার প্রাইমারি স্কুল ভালো লাগতো না। হয়ত নিয়মিত হননি।
কিন্তু ওই বয়সে একটি ঘটনাই যথেষ্ট ছিল। আমাকে কেউ উত্যক্ত করেছে তা না। তবে কিছু কথা শুনতে হয়েছে আমাকে। শিক্ষকরা শেতাঙ্গ শিক্ষার্থীদের বেশি পছন্দ করতো আমাদের থেকে। শামীমা বেগম এখন রোজোভার বিচার পদ্ধতির উপরে ভরসা করতে পারছেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, যদি তার বিচার শুরু হয় এবং সন্ত্রাসবাদের অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হতে পারে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, শামীমা এই বিচারকার্য নিয়ে অত্যন্ত ভীত এবং উদ্বিগ্ন। তাকে বলা হয়েছে যে রোজাভায় বিচারের মুখোমুখি করা হবে। যেসব নারীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের মধ্যে তিনি একজন হতে পারেন। আগামি সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবরে তার বিচার শুরু হতে পারে বলেও জানা গেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল আরও জানিয়েছে, রোজাভায় মৃত্যুদণ্ড দেয়ার প্রচলন নেই। কিন্তু এতেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না শামীমা বেগম। তার ধারণা, তাকে মৃত্যুদণ্ডই দেয়া হবে। যদিও মৃত্যুদণ্ড না দেয়া হলেও তাকে আজীবন জেলে থাকতে হতে পারে। একসময় শামীমা বেগমের আইনজীবী হিসেবে কাজ করা তাসনিম আকুঞ্জি বলেন, শামীমা যে ভয় পাচ্ছেন তার কারণ রয়েছে। সেখানকার বিচার ব্যবস্থা আসলেই অনেক দুর্বল।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সরকার ২০২১ সালে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। ফলে সিরিয়ায় আটকা পড়ে আছেন তিনি। এখন তার অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের আশঙ্কা করছেন শামীমা।
Leave a Reply