বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পার্লামেন্ট সদস্য আপসানা বেগমের জায়গায় কাউন্সিলর লিজা বেগমের ভিডিও ব্যবহার করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সে ঘটনায় ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি লিজা বেগমকে ৩০ হাজার পাউন্ড বা প্রায় ৩৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩০০ টাকা দিতে সম্মত হয়েছে বিবিসি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আপসানা বেগম পূর্ব লন্ডনের পপলার ও লাইমহাউজ আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে নির্বাচিত ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা। তার বিরুদ্ধে হাউজিং জালিয়াতির মামলা চলার সময়ে প্রকাশিত খবরে লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার কাউন্সিলের পিমলিকো সাউথ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিজা বেগমের ছবি ব্যবহার করে বিবিসি।
২০১৯ সালে লেবার দলের ‘রেস অ্যান্ড ফেইথ ম্যানিফেস্টো’ প্রকাশ করার একটি ইভেন্ট প্রচার করা হয় ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবরে বিবিসি লন্ডন নিউজে। এতে বিবিসির লন্ডন রাজনৈতিক সংবাদদাতা লিজা বেগমের ছবি দেখিয়ে বলেন এই হলেন আপসানা বেগম। অসততার তিনটি অভিযোগ মোকাবিলা করছেন তিনি। আপসানা বেগমও একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ।
তিনি তার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের’ বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। পরে তাকে অবশ্য বেকসুর খালাস দেয়া হয়। তার আগেই আপসানা বেগমের স্থানে বিবিসির রিপোর্টে লিজা বেগমের ছবি দেখিয়ে বলা হয়, তিনি হাউজিং খাতে প্রতারণা বা জালিয়াতি করেছেন এমন সন্দেহ করার যৌক্তিক কারণ আছে। এ নিয়ে আদালতে চলে আইনি লড়াই।
মঙ্গলবার আদালত একটি বিবৃতি দেন এ মামলায়। তাতে বলা হয়, ভুল করে একজনের স্থলে অন্যকে ব্যবহার করায় মিস লিজা বেগম যথেষ্ট হতাশায় ভুগেছেন। বিচারক আরও বলেন, এটা দৃশ্যত আরেকটি উদাহরণ যেখানে বিবিসি এবং মিডিয়া বিএএমই (ব্লাক, এশিয়ান, মাইনরিটি এথনিক)-কে ভুল করে শনাক্ত করে থাকে। এমন একটি ভুল প্রচার করার আগে বিবিসির কেউই তার যথার্থতা যাচাই করেনি।
এ প্রেক্ষিতে লিজা বেগম প্রথমে বিবিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই রাতেই। পরের দিনের খবর প্রচারের সময় এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিবিসি। এরপরই লিজা বেগম মানহানির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা শুরু করেন। তার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নামেন রহমান লোই।
মঙ্গলবার আদালতে পড়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভুল শনাক্তকরণের এ প্রক্রিয়া কাউন্সিলর লিজা বেগমের জন্য বেদনা ও যন্ত্রণার কারণ হয়ে ওঠে। তিনি বিশেষভাবে ব্যথিত হন। তারা দুজনে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং বিবিসিতে কেউ সে ফুটেজটি সম্প্রচারের আগে সংশোধন করেনি।
উল্লেখ্য, সেখানকার একজন এমপি আপসানা বেগমের বিরুদ্ধে ‘হাউজিং খাতে জালিয়াতি’র অভিযোগ ওঠে। কিন্তু পরে তাকে ওই অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। বিবিসি এ নিয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে পরিচয় নিয়ে মিক্স-আপ করে ফেলে। আপসানা বেগমের নামের সঙ্গে জুড়ে দেয় লিজা বেগমের নাম। এতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ লেবার দলের কাউন্সিলর লিজা বেগমের যে মানহানি বা ক্ষতি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে তাকে ৩০ হাজার পাউন্ড দিতে রাজি হয়েছে বিবিসি।
Leave a Reply