প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের দিনটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ দিন। আজ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলাম। আপনারা পাশে ছিলেন বলেই পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। জনগণের শক্তি বড় শক্তি। আমি সেটাই বিশ্বাস করেছি।
শনিবার দুপুরে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের ফলক উম্মোচনের পর কাঁঠালবাড়িতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি, দেয়ার কিছু নেই। আছে শুধু ভালোবাসা, দিয়ে গেলাম তাই। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ করতে প্রস্তুত। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমরা এই দেশকে গড়ে তুলবো।
মানুষকে উন্নত জীবন দিতে চাই। জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেই পারেনি। পারবেও না। পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বাধা দিয়েছেন, তাদের উপযুক্ত জবাব দেয়া হয়েছে। এজন্য সাহস দিয়েছেন আপনারা। শক্তি দিয়েছেন আপনারা। আমিও আপনাদের পাশে আছি। এই দেশ আপনাদের, এই দেশ আমাদের।
প্রধানমন্ত্রী দুপুর ১২ টা ৫২ মিনিটে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। এসময় মঞ্চে বাজানো হয় শিল্পী আবদুল আলীমের ‘সর্বনাশা পদ্মা নদীরে’ এবং ‘নদীরে একটি কথা সুধাই শুধু তোমারে গান।
জয় বাংলা স্লোগানে জনসভাস্থল মুখরিত করে তুলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেতারাসহ প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন পদ্মা সেতু হবে না, আসেন, দেখে যান পদ্মা সেতু হয়েছে কিনা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন এই আওয়ামী লীগে পদ্মা সেতু করবে পারবে না। আজ খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞাসা করি আসুন দেখে যান পদ্মা সেতু হয়েছে কিনা।
যারা পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা দিয়েছিল তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছি। তিনি বলেন, ২০০১ সালে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় এসে এর নির্মাণ কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। এদেশের মানুষ তার ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। স্বাধীনতার পর তিনি দেশ গঠনে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ১৯৭৫ সালে স্বপরিবারে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। থমকে যায় এদেশের উন্নয়ন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। পদ্মা সেতুর কারণে যারা ঘর হারিয়েছেন তাদের সকলকে আমরা ঘর করে দিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব এটাই আমাদের প্রতীজ্ঞা।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ। আপনাদের পাশেই আছি।
আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, ভাগ্য উন্নয়নের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত এই ওয়াদা আমি দিয়ে গেলাম। আপনাদের জন্য প্রয়োজনে আমি আমার নিজের জীবনটাও দিয়ে দেব। ভাষণ শেষে তিনি, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেন।
Leave a Reply