ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আগের দিনই ছিটকে গিয়েছিলেন আরও তিন প্রার্থী। তবে পার্টির মধ্যে প্রথম দফার ভোটে বাজিমাত করলেন দেশটির সদ্য সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক।
কে হচ্ছেন ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী? সেটি নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে প্রথম দফার ভোটে কনজারভেটিভ পার্টির ৩৫৮ জন সাংসদ ভোট দিয়েছেন। সে হিসেবে প্রথম দফাতেই বাজিমাত করলেন ঋষি সুনাক।
ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই রাজনীতিবিদ বরিস জনসনের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে ৮৮টি ভোট পেয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। তার পরেই রয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী পেনি মর্ডান্ট। তিনি পেয়েছেন ৬৭ ভোট। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের ভোটে ঋষিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছেন তিনি।
সিজিটিএন-এর খবরে জানানো হয়েছে, প্রথম রাউন্ডের ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন অর্থমন্ত্রী নাদিম জাহাউই এবং জেরেমি হান্ট। তবে ৫০ ভোট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস।
প্রথম রাউন্ডেই জাহাউই ছিটকে যাবে তা কেউ আশা করেনি। অনেকেই তাকে সুনাকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছিলেন। কিন্তু জাহাউই এবং হান্ট কেউই ন্যূনতম ৩০টি ভোটও পাননি। এর ফলে প্রথম রাউন্ডের পর, পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রইলেন ঋষি সুনাককে নিয়ে মোট ছয়জন প্রার্থী।
প্রথম রাউন্ডের ভোটের ফলাফলে ঋষি সুনাক পেয়েছেন ৮৮ ভোট, পেনি মর্ডান্ট পেয়েছেন ৬৭ ভোট, লিজ ট্রাস পেয়েছেন ৫০ ভোট, কেমি ব্যাডেনোচ পেয়েছেন ৪০ ভোট, টম তুগেনধাত পেয়েছেন ৩৭ ভোট এবং সুয়েলা ব্রেভারম্যান পেয়েছেন ৩২ ভোট। আর বাদ পড়া নাদিম জাহাউই পেয়েছেন ২৫ ভোট এবং জেরেমি হান্ট পেয়েছেন ১৮ ভোট।
এর পরের দফা ভোট আয়োজিত হবে দেশটি সময় বৃহস্পতিবার। এরপরও যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে তা আগামি সপ্তাহে ভোটের মাধ্যমে সমাধান করা হবে। যতক্ষন না দু’জন প্রতিদ্বন্দী থাকছে ততক্ষণ ভোট আয়োজিত হবে।
এরপর ওই দুই জনের মধ্যে দেশজুড়ে থাকা কনজারভেটিভ দলের ১ লাখ ৮০ হাজার সদস্য ভোট দেবেন। আগামি ৫ই সেপ্টেম্বর সেই ভোটের ফলাফল জানা যাবে। সেই ভোটে যিনি জয়ী হবেন তিনিই হবেন বৃটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
ব্রিটেনে কঠোর কোভিড লকডাউন চলাকালীন সরকারি বাসভবনে মদের পার্টি বসানো নিয়ে দলের মধ্যেই অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হয়েছিলেন বরিস জনসন। তার পর থেকে একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে তার সরকার। তবে সর্বশেষ কনজারভেটিভ পার্টির ডেপুটি চিফ হুইপ ক্রিস পিনচারের যৌন কেলেঙ্কারি কফিনে শেষ পেরেক মেরে দেয়।
এরপরই জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ঋষি সুনাক। যার সূত্র ধরে একের পর এক সাংসদ ও পদাধিকারীরা ইস্তফা দেন। বরিস জনসনকে পদত্যাগে বাধ্য করার পেছনে সুনাকের ভূমিকাই ছিল সব থেকে বেশি। পদত্যাগের ঘোষণার পরই প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য প্রচার শুরু করেছিলেন সুনাক।
মূলত; বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করার পর, তার উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিল ঋষি সুনাকের নামই। একের পর এক কেলেঙ্কারিতে মাটিতে মুখ থুবরে পড়েছিল জনসন সরকারের ভাবমূর্তি।
Leave a Reply