রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯

নেপালে বারবার প্লেন দুর্ঘটনার কারণ

নেপালে বারবার প্লেন দুর্ঘটনার কারণ

নেপালে প্রতিবছর ছুটে আসে প্রচুর বিদেশি পর্যটক। তাদের উদ্দেশ্যে পর্বতমালার সৌন্দর্য উপভোগ করা। কিন্তু পাহাড়ি কন্যাখ্যাত দেশটিতে প্রায় সময় উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় সামনে আসছে নানা প্রশ্ন।

ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া ও বিমান সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে দুর্ঘটনা থামছে না। রবিবারের (১৫ জানুয়ারি) ঘটনাকে গত ৩০ বছরে নেপালে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রবিবার কাঠমান্ডু থেকে পর্যটন শহর পোখারায় যাচ্ছিল ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ‘৯ এন-এএনসি এটিআর–৭২’ মডেলের উড়োজাহাজটি। এতে ছিলেন চার ক্রুসহ ৭২ জন। সকালে উড়োজাহাজটি পোখারা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় সেতি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়।

ধারণা করা হচ্ছে বিমানের যাত্রী কেউই বেঁচে নেই। উড়োজাহাজটিতে ৫৩ নেপালের আরোহী ছিলেন। এছাড়া পাঁচ জন ভারতীয়, চার জন রাশিয়ান এবং দুই জন কোরিয়ান ছিলেন। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে ছিলেন।

এমন দুর্ঘটনাকে আবহাওয়ার ধরন, পাহাড়ের মাঝ দিয়ে বিমান ওঠানামা, দৃশ্যমানতা কম এবং পাহাড়ি ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে নেপাল বিমানে ভ্রমণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ পাইলটের মতে, হিমালয়ের উচ্চতা এবং সরু ল্যান্ডিং স্ট্রিপগুলো নেভিগেট করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং তাদের জন্য।

নেপালের ইতিহাসে গত ৩০ বছরে ২৭টি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নথিভুক্ত করেছে এভিয়েশন সেফটি ডাটাবেস। গত এক দশকে নেপালে উল্লেখযোগ্য উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা হলো-

গত বছরের মে মাসে ডি হ্যাভিল্যান্ড কানাডা ডিএসসি-৬-৩০০ টুইন অটার প্লেন উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পর বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৬ জন নেপালি, চার ভারতীয় এবং দুই জন জার্মানির নাগরিক প্রাণ হারান।

২০১৮ সালে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় আগুন ধরে যায়। বিমানবন্দরের কাছেই একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয় এটি। ওই ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। এরমধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বাংলাদেশি। তখন নেপাল বিমানবন্দরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে।

পরের বছর ২০১৯ সালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নেপালের পূর্বাঞ্চলে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে হলে পর্যটনমন্ত্রীসহ ৬ জন প্রাণ হারান। ২০১৬ সালে তারা এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ২৩ আরোহী নিহত হন। বিমানটি পোখারা থেকে উড্ডয়নের পরই বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই কারণে একটি ছোট বিমান দুর্ঘটনায় ১৮ জন মারা যান। আর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের ঘটনা ছিল ভিন্ন। ছোট উড়োজাহাজ পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিধ্বস্ত হয়, এতে ১৯ যাত্রী নিহত হন।

নতুন প্লেনের সংকট, অবকাঠামোতে বিনিয়োগের অভাব এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কারণকেও দায়ী করা হচ্ছে। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে ২০১৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেপালভিত্তিক সব ধরনের এয়ারলাইন্সকে তাদের আকাশসীমায় ওড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যা এখনও বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024