যুক্তরাজ্যের সরকারি চাকরিজীবী ও শিক্ষকেরা উন্নত কাজের পরিবেশ ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন। খবর সিএনএনের।
যুক্তরাজ্যের সরকারি চাকরিজীবী ও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ধর্মঘটের ডাক দেন। তাদের ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে ট্রেন চালকসহ ৫ লাখের বেশি পেশাজীবী তাতে যোগ দেন।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পেশাজীবীদের ধর্মগটের কারণে এদিন যুক্তরাজ্যজুড়ে সকল স্কুল বন্ধ রাখা হয়। ট্রেন চলাচলও প্রায় বন্ধই ছিল। সীমান্তে নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
ন্যাশনাল এডুকেশন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মেরি বুস্টেড সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যেভাবে বেতন হ্রাস পাচ্ছে তার অর্থ হচ্ছে, প্রচুর মানুষ এই পেশা ছেড়ে চলে যাবেন। ফলে যারা থেকে যাবেন তাদের জন্য কাজ চালিয়ে নেয়া আরেও কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমাদের ইউনিয়নের শিক্ষকদের সামনে এই ধর্মঘটে অংশ নেয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না।
সাউথ লন্ডনের এক স্কুলের শিক্ষক বলেন, গত এক যুগে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এতটাই হ্রাস পেয়েছে যা সত্যিই বিপর্যয়কর। তিনি আরও বলেন, আমার পেছনে যারা আছেন তাদের কেউই আজকের ধর্মঘটে অংশ নিতে আগ্রহী নন। কিন্তু ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েই তারা বলেছেন, যথেষ্ট হয়েছে এবং এবার অবশ্যই সবকিছুর একটা পরিবর্তন দরকার।
তবে পেশাজীবীরা যতই ধর্মঘট করুন, দেশ ও বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার যে কৌশল নিয়েছে তাতে অনড় থাকার কথা বুধবার পুনরায় ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী জিলিয়ান কেগান।
ব্রিটিশ সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতার বিষয়ে বেশ কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বলেছে, তারা বেতন বাড়ানোর যে দাবি করছে তা পূরণ করা হলে কেবল মাত্র মূল্যস্ফীতি আরো খানিকটা বাড়বে।
বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রী জিলিয়ান বলেন, শ্রমশক্তির একটি অংশের বেতন বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতিকে আরেকটু বাড়তে দিয়ে আমরা সবার জন্য পরিস্থিতি আরো খারাপ করে তুলতে পারি না। অর্থনৈতিকভাবে এটা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
কনসালটেন্সি ফার্ম সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) এর তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ মাসে ধর্মঘটের কারণে শিল্পকারখানার কাজে যে বিঘ্ন ঘটেছে তার প্রভাবে এখন পর্যন্ত অর্থনীতিতে সেভাবে পড়েনি। তবে ঋষি সুনাক সরকারের উপর এর রাজনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে।
যুক্তরাজ্যে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের বেশি। দেশটিতে গত ৪ দশকের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। গত কয়েক মাসে যুক্তরাজ্যে স্বাস্থ্য, পরিবহন, অ্যামাজন ওয়্যারহাউজ ও রয়্যাল মেইলসহ বিভিন্ন সেক্টরের কর্মীরা ধর্মঘট করেছেন। এক দশকের মধ্যে এত বৃহৎ ধর্মঘট দেখা যায়নি যুক্তরাজ্যে। এদিন প্রায় ৩ লাখ শিক্ষক ধর্মঘটে অংশ নেন বলে ধারণা করা হয়।
Leave a Reply