ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম মাস রমজান উপলক্ষ্যে বর্ণিল সাজে সেজেছে রাজধানী শহর লন্ডনের সেন্ট্রাল লন্ডন। গোটা এলাকা প্রায় ৩০ হাজার বাতির আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, পশ্চিম লন্ডনের লেস্টার স্কয়ারের সঙ্গে পিকাডিলির সংযোগ ঘটানো কভেন্ট্রি স্ট্রিটে গেলেই সাজসজ্জার দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, মাথার ওপর উজ্জ্বল আলোয় জ্বলজ্বল করছে ‘হ্যাপি রামাদান’ তথা ‘শুভ রমজান’ লেখা।
খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এই আলোকসজ্জার উদ্বোধন করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। শহরটিতে ১৩ লাখ মুসলিমের বাস। তবে এই প্রদর্শনী আয়োজনের পেছনে যিনি রয়েছেন, সেই উদ্যোক্তার নাম আয়েশা দেশাই। ক্রিসমাস লাইটে অনুপ্রাণিত হয়ে রমজান উপলক্ষে একই ধরনের আলোকসজ্জার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন তিনি।
আয়েশা বলেন, এটি ক্রিসমাস লাইটের মতো করার ইচ্ছা ছিল আমার। মনে পড়ে, বড় হওয়ার সময় আমার বোনের সঙ্গে (লন্ডনে) ক্রিসমাস লাইট দেখতে যেতাম। আমার মধ্যপ্রাচ্যেও থাকার সুযোগ হয়েছিল। আমি সেই আনন্দ ও জাদু লন্ডনে আনতে চেয়েছিলাম, যে শহর থেকে আমি এসেছি।
রমজান উপলক্ষে লন্ডনকে সাজানোর এই উদ্যোগ তিন বছর আগে শুরু করেছিলেন আয়েশা দেশাই। সেটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ নেওয়ায় আবেগ আপ্লুত তিনি। আয়েশা বলেন, এটি অবিশ্বাস্য। মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি অভিভূত।
তিনি বলেন, এটি মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। আমি সেই সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের প্রতিবেশীদের জানাতে চেয়েছিলাম, এটি আমাদের জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ও আমার কাছে বছরের সবচেয়ে প্রিয় মাস এবং আজ আমি এখানে থাকতে পেরে কৃতজ্ঞ।
রমজান উপলক্ষে লন্ডনের শুধু প্রধান অংশই নয়, বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে শহরের অন্যান্য প্রান্তেও। যেমন- দক্ষিণ কেনসিংটনের ভিক্টোরিয়া এবং অ্যালবার্ট মিউজিয়ামে উন্মুক্ত ইফতারের আয়োজন করা হবে। মিউজিয়ামটিতে একটি অস্থায়ী মসজিদ এবং রমজান প্যাভিলিয়নও তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া, স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ স্টেডিয়ামের পিচের পাশে উন্মুক্ত ইফতার আয়োজন করবে ফুটবল ক্লাব চেলসি। ব্রিটিশ ক্লাব এবং প্রিমিয়ার লিগ স্টেডিয়ামটির জন্য এ ধরনের আয়োজন এটিই হবে প্রথম। মাসের শেষের দিকে একই কাজ করবে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামও।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গাল্ফ নিউজ জানিয়েছে, এ বছর সবচেয়ে বেশি সময় না খেয়ে থাকতে হবে আইসল্যান্ডের বাসিন্দাদের। রমজানের প্রথম দিন অর্থাৎ ২৩ মার্চ সেখানে উপবাস থাকতে হবে ১৫ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। রমজানের শেষ দিন সেখানে ফজর ও মাগরিবের মধ্যে ব্যবধান হবে ১৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট। অর্থাৎ দেশটিতে সর্বশেষ রোজাটি হবে ১৬ ঘণ্টা ২০ মিনিটের।
অপরদিকে রমজানে উপবাসের সময় কম হবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোতে। এসব এলাকায় সূর্য উদয় ও অস্তের মধ্যে ব্যবধান হবে ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা। যেমন চিলির কিং স্কটে উপবাস থাকতে হবে ১২ ঘণ্টারও কম সময়।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, রমজান উপলক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের এ শহরটিতে এ ধরনের সাজসজ্জা আগে কখনো দেখা যায়নি।
Leave a Reply