দীর্ঘ সময় ধরেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অসুস্থতা নিয়ে গুজব রয়েছে। কখনও খবর হয়েছে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। আবার কখনও শোনা গেছে তার খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটার সংবাদ।
কোনোটিই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত না হলেও এসব খবরে পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস রাখেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নতুন করে পুতিনের অসুস্থতার গুজব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এক উদ্ভট মন্তব্য করলেন কিয়েভের প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, পুতিন শীঘ্রই মারা যাবেন।
বুধবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে ওমন উদ্ভট মন্তব্য করলেন জেলেনস্কি। এ খবর দিয়েছে ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়, জেলেনস্কি বলেছেন, পুতিন শীঘ্রই মারা যাবেন এবং এটা কঠিন সত্য। এটা (যুদ্ধ) শেষ হয়ে যাবে।
পুতিনের অতি পৌরুষ ভাবমূর্তি ধরে রাখার প্রচেষ্টা থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য ভগ্নের গুজবের মুখোমুখি হচ্ছেন। বর্তমানে পুতিনের বয়স ৭২ বছর। সম্প্রতি তার মুখাবয়ব ফুলে উঠেছে। দাঁড়ানোর সময় পা কাঁপতে থাকে। আর চোখগুলো সবসময় রক্তাভ থাকায় পুতিনের অসুস্থতার জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলেনস্কি দাবি করেছেন, পুতিন রাশিয়ার মিত্র দেশগুলোর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ভেতর থেকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন, যা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শঙ্কা তৈরি করেছে।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি সম্পন্ন হলে ইউরোপ কিয়েভকে কেমন নিরাপত্তা দেবে সে বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হলে জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদের স্বাগত জানাবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
প্যারিসে জেলেনস্কির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রন বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন থামানোর এখনই চূড়ান্ত সময়। কেননা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এছাড়া ইউক্রেনের জন্য দুই বিলিয়ন ইউরোর সামরিক সহায়তা ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।
৩০ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতিতে অবশ্যই রাশিয়াকে সম্মত হতে হবে বলে জোর দিয়েছেন ম্যাক্রন। অবশ্যই এটা কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ফরাসি প্রেসিডেন্ট মস্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়া এখনও যুদ্ধের মনোভাব পোষণ করছে। যার ফলে কিয়েভের জন্য শান্তি চুক্তি গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের একটি ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় হয়। রাশিয়ার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুরের সঙ্গে বৈঠকের সময় হঠাৎ চেয়ারে ঝুঁকে পড়েন প্রেসিডেন্ট পুতিন। পরে টেবিল ধরে কথা বলতে থাকেন। এছাড়া তার ক্রমাগত কাশি এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে ঝাঁকুনির খবরও শোনা গেছে। বেশ কয়েকবার তাকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখা গেছে। এমনও দাবি করা হচ্ছে যে, পুতিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন।
Leave a Reply