রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৬

বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীর ১৪৫০ জন সদস্যে সুদানে

বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীর ১৪৫০ জন সদস্যে সুদানে

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখে যাচ্ছেন। এতে যোগ হচ্ছেন আরও ১৪৫০ জন। তাই এবার সুদানে শান্তি মিশনে যাচ্ছে ১৪৫০ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে সেনা পাঠানোর প্রক্রিয়া। চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুপমেন্ট বহনের বিশেষ জাহাজ। জাহাজে বোঝাই হচ্ছে মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় গাড়ি, অস্ত্র, সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র। অগ্রবর্তী একটি দল সুদানে পৌঁছে গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ ৯টি দেশে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশগুলো হচ্ছে- আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, সুদান, পশ্চিম সাহারা, পূর্ব তিমুর, লেবানন ও হাইতি।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এবারের স্লটে সুদানে ১২৫০ জন সেনা যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু শেষমেষ আরও দুইশ’ অতিরিক্ত শান্তিরক্ষীর সুদান শান্তি মিশনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এনিয়ে মোট ১৪৫০ জন যাচ্ছেন উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের সীমান্তবর্তী এই আরব দেশটিতে। ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক আগেই বিশ্বের সবচে বেশি সেনা সরবরাহকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এতে আরও ১৪৫০ জন সেনা যোগ হওয়াতে এখন বাংলাদেশকে সহজেই কোনো দেশ ছাড়িয়ে যেতে পারবে না।

ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে জাতিসংঘ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি সেনারা বিশ্বের দেশে দেশে যেখানেই অশান্ত পরিবেশ সেখানেই দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকা রেখে কাজ করছে। আর সে কারণেই জাতিসংঘও কোথাও সেনা নিয়োগ প্রয়োজন হলে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেয়। বর্তমানে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য মিলে মোট আট হাজার ২০ জন বাংলাদেশি বিশ্বের ১২টি দেশে শান্তিরক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে পুলিশ ১৮৪২ জন বাকিরা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। শান্তিরক্ষীদের মধ্যে ১৮৪ জন রয়েছেন নারী। এর বাইরে সুদানে নতুন ১৪৫০ জন যোগ দিতে চলেছেন।

এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, দেশের উন্নয়নবিরোধী একটি শক্তি প্রায়শই ছড়ানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী থেকে জাতিসংঘ আর কোনো শান্তিরক্ষী নেবে না। এই শক্তিটি নিউইয়র্কেও সক্রিয়। তবে তাদের এই প্রত্যাশা কখনোই পূরণ হবে না। জাতিসংঘে বাংলাদেশ একটি ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। নতুন করে আরও ১৪৫০ জনের শান্তিমিশনে যোগ দেওয়াটি তারই প্রমাণ। গত মে মাসের হিসাবে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৬৩টি শান্তি মিশনে অংশ নিয়েছে। সব মিলিয়ে এসব মিশনে বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত ৮২ হাজার ৯৬৫ জন শান্তিকর্মী যোগ দেয়। জাতিসংঘ মিশন জানায়, এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ৯২ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০৬ জন।

ড. মোমেন বলেন, কেবল সেনা পাঠিয়ে নয়, উচ্চপদগুলোতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা পাঠানো এবং শান্তি মিশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বাংলাদেশিদের অবস্থান নিশ্চিত করতে নিউইয়র্কে স্থায়ী মিশন থেকে অব্যাহতভাবে লবিং চলছে। তিনি বলেন, মিশনে সরঞ্জমাদি সরবরাহের কাজ পেতেও বাংলাদেশ সচেষ্ট। এক্ষেত্রে কিছু কিছু সাফল্য আসছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে। ড. মোমেন জানান, অনেক আগেই পাকিস্তান ও ভারতকে পেছনে ফেলে ইউএন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বড় অবদানকারীর ভূমিকা পালন করছে বাংলাদেশ।

ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন মিশনে কাজ অসমাপ্ত রেখে জাতিসংঘ বাহিনী ফিরে এসেছে। কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশিরাই এর ব্যতিক্রম। আফ্রিকার সহিংসতাবিক্ষুব্ধ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছেন। সুদানেও বাংলাদেশ মিশন কার্যকর ভূমিকা রেখে শান্তি স্থাপনে সক্রিয় থাকবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরও সেনা পাঠাবে এমন আশাবাদ জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ তার যোগ্যতা দিয়েই জাতিসংঘে এমন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করে নিয়েছে




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025