রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৪:৫৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামানের কাণ্ড

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামানের কাণ্ড

শীর্ষবিন্দু নিউজ: ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিনব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামান। তার নির্দেশে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল না করায় এক উপ-মহাব্যবস্থাপককে (ডিজিএম) বদলি করে অন্য বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছেন। হুমকি দিয়েছেন বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করারও। নিবেদিত ও চৌকষ এ কর্মকর্তা মো. মনির আহমেদ সম্প্রতি বড় বড় জালিয়াতির তদন্ত করেছেন যোগ্যতার সঙ্গে। অপরদিকে মনিরুজ্জামান জামায়াত সমর্থিত কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে প্রথম হলমার্ক কেলেংকারির ঘটনায় পরিদর্শক হিসেবে কাজ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে তলব করে বিস্তারিত জানতে চান। সূত্র মতে, নির্বাহী পরিচালক মনিরুজ্জামান উপ-মহাব্যবস্থাপক মনির আহমেদকে বলেন, প্রভাবশালীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে হস্তক্ষেপ করেছে মর্মে দুদকে লিখিত দিতে বলেন। এটিই তিনি চান। কিন্তু মনির আহমেদ সিকদারসহ পরিদর্শক দল তাদের প্রাপ্ত তথ্যের বাইরে অতিরঞ্জিত কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। আর এতেই ক্ষুব্ধ হন মনিরুজ্জামান।

অনির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মনির আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পরিদর্শক দল হলমার্ক কেলেংকারির বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। তদন্ত চলাকালে মনির আহমেদ ছাড়াও গঠিত টিমের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর দেখা হয় সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখায়। সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী তাকে নিজের একটি কার্ড দেন। ঘটনার দিনই মনির আহমেদ গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে বিষয়টি জানান।

পরিদর্শন দলের দুদকে দেওয়া জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, পরিদর্শক দল গভর্নরকে জানান, পরিদর্শন পরিচালনাকালে সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী একটি কার্ড দিয়েছেন তাদের। সূত্র মতে, মামলার তদন্তের স্বার্থে দুদক গত ৪ ডিসেম্বর আবার মনির আহমেদকে তলব করেন। সেখানেও তিনি একই কথা জানান। কিন্তু দুদক থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট নির্বাহী পরিচালক জানিয়েছে, সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী তদন্তকে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু আপনারা বলছেন, না। ফলে বিয়ষটি নিয়ে পরিদর্শক দলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় মনিরুজ্জামানের। আর এমন প্রেক্ষাপটে মনির আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

শুধু তাই নয়, তিনি এক সময় ইসলামী ব্যাংকের পর্যবেক্ষক হিসেবেও কাজ করেন। তখন তিনি ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যাপক আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। মনিরুজ্জামান জানিয়েছিলেন, নির্বাহী পরিচালক হলেও আমাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। যা ডেপুটি গভর্নরদের কাজ। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই আমাকে নিতে হয়।

জানা গেছে, এসএম মনিরুজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রকালে তিনি শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। কিন্তু খোলস পাল্টে বর্তমান গভর্নরের আমলেও বিশেষ সুবিধা ভোগ করেছেন তিনি। আর ক্ষমতার পালাবদল হলে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সূত্র জানিয়েছেন, নির্বাহী পরিচালকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশ সফরে থাকেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নিয়োগ করা হলেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেন না। সব সময় ব্যস্ততার অজুহাত দেখাতেন।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025