মান্নান মারুফ: বিরোধী দলীয় নেতা না থাকলেও বিএনপির প্রধান হিসেবে পুলিশি নিরাপত্তা পাবেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আগে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন নিয়মিত কিছু নিরাপত্তাকর্মী দেখ-ভাল করবেন বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো নাগরিক যদি নিজের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের প্রয়োজন অনুভব করেন, তাহলে তাকে এ ব্যাপারে আবেদন করতে হবে। পুলিশি নিরাপত্তা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে খালেদা জিয়ার বাসায় যতটুকু নিরাপত্তা দরকার ঠিক ততটুকুই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ। দেশের প্রথম শ্রেণীর একজন নাগরিক হিসেবে তার নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব।
ডিএমপি মুখপাত্র বলেন, সেক্ষেত্রে সরকার যদি মনে করে তার নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার, তাহলে সেটাও বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে রাজনৈতিক সহিংসতা বা কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা থাকলে খালেদা জিয়ার বাসা ও তার কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হতে পারে। রাজনৈতিক দলনেতা হিসেবে নিরাপত্তা পাওয়া তার অধিকার।
সরকারের একতরফা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও ভোটবর্জন করে নির্বাচনে অংশ না নেয়নি বিএনপি। গত ৫ জানুয়ারির এ নির্বাচনে জয়লাভ করে নতুন সরকার গঠনের পথে আওয়ামী লীগ। আর প্রধান বিরোধী দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন আর বিরোধী দলীয় নেতা নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পর যেকোনো সময়, যে কোনো দিন খালেদা জিয়ার সরকারি প্রটোকল সরিয়ে নেবে পুলিশ। সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পরই মূলত খালেদার গুলশানের বাসভবনের নিরাপত্তা নিয়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা টিম উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে গুলশান-২ এলাকার খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’কে ঘিরে দু’দিন আগে ১০টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদ ২২ জন আনসার সদস্য চেয়ে আনসার-ভিডিপি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদনের পর ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার বাসভবন ও রাজনৈতিক কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে আনসার-ভিডিপির সদর দফতরে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে সদর দফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী গুলশান থানার আনসার-ভিডিপির কর্মকর্তা কাজী আহসানুল হক খালেদা জিয়ার বাসভবন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি একটি প্রতিবেদনও পাঠিয়েছেন। এ ব্যাপারে সদর দফতর থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কাজী আহসানুল হক বলেন, সদর দফতরের চিঠি পেয়ে বিরোধী দলীয় নেতার বাসভবন পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এখন সদর দফতর থেকেই পরবর্তী নির্দেশনা আসবে। খালেদার প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদও আনসার চাওয়ার বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীরা সংসদ ভবনে শপথ গ্রহণ করেন। দশম সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ