শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: একমাসের ছুটিতে নিউইয়র্কে মেয়ের বাড়িতে আছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ। তার অনুপস্থিতেই হয়ে সম্পন্ন হচ্ছে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৫টি ধাপ। নির্বাচন নিয়ে দেশে-দেশের বাইরে চলছে বিতর্ক। এ নিয়ে দেশের বাইরে থাকলেও উদ্বেগহীন দিন কাটাতে পারছেন না সিইসি।
কাজী রকিবউদ্দিনের বিদেশ সফরত থাকা অবস্থায় তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলামকে চিঠি দিয়েছেন সিইসি। চিঠিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নির্বাচনী সহিংসতা ও অনিয়মের খবরের উল্লেখ করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তার হালনাগাদ তথ্য চেয়েছেন তিনি।
একই সঙ্গে সচিবকে এসব অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২৭ মার্চ ই-মেইলে এ চিঠিটি পাঠানো হয়। এর আগে গত ২১ মার্চ প্রায় একই ভাষায় একটি ইমেইল পাঠান সিইসি। নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান স্বাক্ষরিত মেইলটি রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর পাঠানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই উপজেলা নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে তাদের উপস্থিতি ও কার্যক্রম দৃশ্যমান করার নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন। ইংরেজিতে লেখা সিইসির চিঠির বাংলায় অনবাদ করে দেওয়া হলো-
প্রিয় সিরাজ,
একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার এই প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের সকলকে অশেষ ধন্যবাদ।
১. ডেইলি স্টারে কিছু বিশেষ ঘটনার প্রতিবেদন এসেছে। দয়া করে সে সম্পর্কে খোঁজখবর নিন এবং দেখুন আমাদের করণীয় কিছু আছে কি না।
২. উপজেলা নির্বাচনের ৪টি পর্যায়ে কতটি আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং ম্যাজিস্ট্রেট তাদের মধ্যে কয়টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং জরিমানা আদায় করেছেন কিংবা কারাদণ্ড দিয়েছেন- তা আমাকে জানান।
৩. কোথাও ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে কি না কিংবা ব্যালটপেপার সংক্রান্ত দুর্নীতি হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসারদের দ্রুত খোঁজ নিতে বলুন এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিন।
৪. কোনো দুষ্কৃতিকারী যেন ভোটকেন্দ্র দখল করতে না পারে এবং ভোটগ্রহণে সংশ্লিষ্টদের কারও যেন কোনো ক্ষতি না হয়- সেদিকে আরও সজাগ হতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নির্দেশ দিন।
৫. প্রিজাইডিং অফিসারদের সতর্ক থাকতে বলুন, কোনো প্রকার বিপদের আশঙ্কা করলেই যেন তারা স্ট্রাইকিং ফোর্সের শরণাপন্ন হন। তারা ত্বরিৎ কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে।
৬. ভোটকেন্দ্রে কোনো প্রকার অবাঞ্ছিত, বেআইনি এবং অসঙ্গত ঘটনা সংঘটিত হলে নির্বাচন বাতিল ঘোষিত হবে।
৭. নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগী এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে আইন নিজ হাতে তুলে না নিতে এবং কোনো প্রকার সহিংসতা উসকে না দিতে আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তাদের মনে করিয়ে দিন, ভোট গ্রহণের প্রতিটি পর্যায়ে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের যে কোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে উপযুক্ত আপিলের শরণাপন্ন হতে হবে।
এছাড়া, বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকেন্দ্রিক কতটি আবেদনপত্র এ যাবৎ জমা পড়েছে- তা আমাকে অবগত করুন। সেইসঙ্গে সংরক্ষিত মহিলা আসন সম্পর্কেও জানান।
শুভকামনায়,
কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার।