শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: গণজাগরণ মঞ্চের ভাঙনের জন্য ইমরানকে দায়ী করেছে পাঁচ প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠন। পাঁচসংগঠন হচ্ছে- বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ঐক্য ফোরাম এবং বাংলাদেশ ছাত্র সমিতি। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের অনৈতিক, অগণতান্ত্রিক এবং একতরফা সিদ্ধান্তের ফলেই সাম্প্রতিক গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, সকলের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে গণজাগরণ মঞ্চ গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং কর্মসূচি উপস্থাপনের দায়িত্ব প্রদান করা হয় ইমরান এইচ সরকারের ওপর। শুরু থেকে সেভাবে চললেও পরবর্তীতে মুখপাত্রের অগণতান্ত্রিক ও একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে মঞ্চে অংশগ্রহনকারী বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে ক্ষোভ, অসন্তোষ ও হতাশার সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, এতে আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত ও গতিহীনতা সৃষ্টি হয় এবং অনেকেই মঞ্চ থেকে দূরে সরে যান।
বাপ্পাদিত্য বসু অভিযোগ করেন, গণজাগরণ মঞ্চের বৃহত্তর স্বার্থে বিবাদমান বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমঝোতার আহ্বান করা হলেও মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার তাতে কোনো সাড়া দেননি। এদিকে ৩ এপ্রিল গণজাগরণ মঞ্চের ওপর হামলার জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে দায়ী করাকে অযৌক্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করে ছাত্রমৈত্রী সভাপতি বাপ্পাদিত বসু। তিনি বলেন, সরাসরি না থাকলেও ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নৈতিকভাবে গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে ছিল এবং এখনও আছে। কারণ তাদের আর মঞ্চের দাবি তো একই। ওই ঘটনায় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা এবং পরষ্পরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত হিসেবে উল্লেখ করেন বাপ্পাদিত্য।
সম্প্রতি গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন নিয়ে মুখপাত্র ইমরান এইচ দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের নামে যদি কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করা হয় তবে তা হবে ১৬ কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণার সামিল। গণজাগরণ মঞ্চের আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমন বলেন, কোনো আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। তবে আমাদের এই পাঁচ ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে কেউ কখনও কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি টাকাও নেয়নি।
মঞ্চের মুখপাত্র পরিবর্তন করা হবে কিনা – জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে শুধু পাঁচ সংগঠনই যু্ক্ত ছিলনা, আরও অনেক সংগঠনই ছিল। তাই এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমরা বলতে পারিনা। তবে গণজাগরণ মঞ্চের বৃহত্তর স্বার্থে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে গণজাগরণ মঞ্চের বিবাদমান সকল পক্ষকে নিজেদের মধ্যে বিভেদ-বিভ্রান্তি দূর করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এই পাঁচ ছাত্র সংগঠনের নেতারা।