শীর্ষবিন্দু নিউজ: নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় সন্দেহভাজন সদস্যদের সংশ্লিষ্টতার আলামত র্যাবের তদন্ত উঠে আসছে বলে জানিয়েছে বাহিনীর একাধিক সূত্র। এখন পর্যন্ত তদন্তে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলামের করা অভিযোগের বাইরে অন্য কোনো গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে, এমন কোনো আলামত মেলেনি।
র্যাব সূত্রগুলি বলছে, নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা গেলেই অনেক তথ্য বের হয়ে আসবে। প্রভাবশালী কেউ কেউ জড়িত হয়ে যেতে পারে। তবে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম গণমাধ্যমে আনতে চায় না তারা। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানকে এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নূর হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। যারা অপরাধী তাদের ব্যাপারে কোন ছাড় নেই। সেটা র্যাব সদস্য হলেও। অবশ্য নূর হোসেন দেশে আছে র্যাবের কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই বলে জানান জিয়া।
সূত্রগুলো বলছে, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে র্যাব এবং নূর হোসেন ছাড়া অন্য কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কারো কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এদিকে, সাতখুনে র্যাবের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ আসার পর র্যাব চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায় বলে অপহৃতদের পরিবার অভিযোগ তোলে। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে অপহৃতদের লাশ ভেসে ওঠে, যাদের অপহরণের পরপরই হত্যা করা হয়েছিল বলে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর র্যাব-১১ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে অকালীন এবং বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। র্যাবের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিচালক আফতাব উদ্দিন আহমেদ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার গোলাম সারোয়ার ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং র্যাব-৩ এর মেজর মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান।
তাছাড়া র্যাব-১১’র কয়েকজন গাড়ি চালকসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গেও কথা বলেছে কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান আফতাব উদ্দিন বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনও হয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন জানিয়ে কমিটি প্রধান বলেন, “তদন্তের বিষয় সাংবাদিকদের জানানোর মতো সময় এখনো হয়নি।
র্যাবের সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে তারা বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছে যার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত থাকতে পারে এমন আলামত তারা পেয়েছে। তবে কিভাবে তাদের সংশ্লিষ্টতা তা পরিস্কার করেনি সূত্র। র্যাবের কমিটি নূর হোসেনের এবং অবসরে পাঠানো র্যাব-১১ অধিনায়কসহ কয়েকজনের মোবাইল কল লিস্ট পরীক্ষা করেছে। সেখানে সন্দেহজনক কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে সূত্রগুলো বলছে।